সানজিদ মাহমুদ সুজন,জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর:
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টেন্ডার বাক্স ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান। সোমবার (১৩-ফেব্রুয়ারী) সকালে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের সম্প্রসারিত ভবনের দ্বিতীয় তলার টেন্ডার ওপেনিং স্পট থেকে এই ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে বলে জানানো হয়।
একের পর এক হাসপাতালের বিরুদ্ধে দূর্নিতীর অভিযোগ আর কর্মকান্ডের বিচার না হওয়ার ধারাবাহিকতায় আজো একটি টেন্ডার ছিনতাই নাটক মঞ্চস্ত হলো।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত মাসের ১৮ তারিখ জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান হাসপাতালের ঔষধ ও অন্যান্য আসবাবপত্র সরবারাহের জন্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার একটি দরপত্র আহবান করেন। উক্ত দরপত্রটির ওপেনিং ডেট ছিলো সোমবার সকালে। ওপেনিংয়ের পূর্ব মূহুর্তে টেন্ডার বাক্সটি ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, সকাল ৯ টার সময় তাকে হাসপাতালের হেড ক্লার্ক ফোন দিয়ে টেন্ডার বাক্সটি অজ্ঞাতনামা ১০/১২জন কর্তৃক ছিনতাইয়ের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে তিনি সাথে সাথে জাজিরা থানায় ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।এসময় টেন্ডার বাক্সটির আংটা ভাঙ্গা অবস্থায় পাওয়া গেলে টেন্ডার ওপেনিং কমিটির সুপারিশে আপাতত টেন্ডার স্থগিত করা হয়েছে।
তবে হাসপাতালের পুরো এরিয়া সিসিটিভির আওতায় থাকলেও তা নষ্ট ছিলো বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হাসান। যার ফলে এই ঘটনায় জড়িতদের কাউকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি। এই ঘটনায় জাজিরা থানায় ১০/১২ জন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন বলে জানান তিনি।
অপরদিকে এই ঘটনায় জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ঠিকাদার মো: রুবেল বেপারি ডা. মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, আমি একজন ঠিকাদার হিসেবে টেন্ডার ড্রপ করতে গিয়ে দেখি নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই টেন্ডার বাক্সটি ভর্তি করা। যার ফলে আমিসহ অন্যান্য ঠিকাদাররা বিষয়টির প্রতিবাদ করলে তিনি টেন্ডার বাক্স ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে টেন্ডার স্থগিত করেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি তার পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে পারবেননা বলে এই নাটক সাজিয়েছেন।মূলত তিনি এখান থেকে বড়ো ধরনের উপটোকন এর মাধ্যমে তার পছন্দের কাউকে টেন্ডার পাইয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
সাধারন মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন, হাসপাতালে লাখ টাকার সিসি ক্যামেরা থাকলেও বিশেষ বিশেষ সময়ে নস্ট হয়।এর পূর্বে করোনার সময়ে হাসপাতালের রোগির লাশ পাশের পুকুরে পাওয়া গেছে, ঐ সময়েও ফুটেজ নেই,সিসি ক্যামেরা নস্ট বলা হয়েছে।কোন কাজেই যদি না আসলো ক্যামেরা, তা হলে এই বাড়তি ব্যায় কেনো।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এসময় টেন্ডার বাক্সটিকে যথাযথ অবস্থায় পেয়েছি।আপাতত আমাদেরকে মৌখিক ও লিখিতভাবে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।