অভিযোগ বার্তা ডেস্কঃ
যুক্তরাষ্ট্রের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র যদি ইউক্রেন রাশিয়ার ভূখণ্ডে ব্যবহার করে, তাহলে এর জবাবে “যথাযথ ও কার্যকর” পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। খবর বিবিসির।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ধরনের হামলা “যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ানোর সমতুল্য।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি রাশিয়ার অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে এটিএসিএমএস (আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম) ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবগত কি না বা এটি বহাল রাখবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন।
ইউক্রেন ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রসহ ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র পেয়েছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলো এতদিন এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাশিয়ার অভ্যন্তরে ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি।ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক হাজারতম দিনে বাইডেনের এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করে।
এদিকে রাশিয়া ইউক্রেনের অবকাঠামোতে আক্রমণ আরও জোরদার করেছে এবং কুরস্ক অঞ্চলে উত্তর কোরিয়া থেকে প্রায় ১০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে আরও এক লাখ সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করতে পারে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি। তবে গত সেপ্টেম্বরে তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেন যদি মার্কিন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে, তাহলে তা ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর “সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণের” সমতুল্য হবে। পুতিনের মুখপাত্র গতকাল বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র “আগুনে ঘি ঢালছে।অন্যদিকে, মার্কিন ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন ফাইনার জানিয়েছেন, রাশিয়াকে ইতোমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষ করে উত্তর কোরিয়ার সেনা মোতায়েন এবং ইউক্রেনের অবকাঠামোয় রাশিয়ার বড় ধরনের হামলার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
গত সপ্তাহে রাশিয়া ইউক্রেনে তীব্র হামলা চালিয়েছে, যার ফলে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে বড় ধরনের ব্ল্যাকআউট দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকজন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। গতকাল ওডেসায় রুশ হামলায় আরও ১০ জন নিহত এবং প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো বাইডেনের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন এবং আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফিরবেন।
ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশি যুদ্ধে জড়ানো বন্ধ করবেন এবং করদাতাদের অর্থ দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ব্যয় করবেন। এছাড়া, তিনি বলেছেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমি ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটাব।” তবে কিভাবে তা করবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আশা প্রকাশ করেছেন, ট্রাম্প উভয় পক্ষকে একটি শান্তিচুক্তিতে আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করবেন।