
বিপ্লব কুমার বিশ্বাস, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার, কালুখালী সরকারী কলেজের পাঁচটি মেহগুনি গাছ সরকারি নিয়ম অমান্য করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ওই কলেজের অধ্যক্ষ মোহম্মাদ আব্দুল হামিদ খান এর বিরুদ্ধে ।
রাজবাড়ী কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের কাঠ ব্যবসায়ী মোঃ ফজলু মোল্লা বলেন কালুখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হামিদ খান আমাকে ডেকে নিয়ে বলেন কলেজ ক্যাম্পাস এর মাঠে একটি ভবন করা হবে, ভবন করার স্বার্থে কলেজের মাঠে থাকা পাঁচটি মেহগুনি গাছ বিক্রয় করা হবে , তখন আমি অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ২৪ হাজার টাকা মূল্যে পাঁচটি মেহগুনি গাছ ক্রয় করি,এককালীন ২৩ হাজার টাকা পরিশোধ করে ৭ নভেম্বর শনিবার সারাদিন গাছ কর্তন করি,পরের দিন রবিবার ৮ নভেম্বর আনুমানিক বেলা ১১ঃ০০ টা পর্যন্ত গাছ কর্তন চলমান থাকিলে হঠাৎ একজন সংবাদকর্মীর উপস্থিতি টের পেয়ে প্রিন্সিপাল মহোদয় আমাদেরকে গাছ কর্তন করতে নিষেধ করে বলেন একটু সমস্যা রয়েছে ।
আমাদেরকে অন্যথায় কাজ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন পুনরায় সংবাদের মাধ্যমে পরবর্তীতে এই গাছ নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হামিদ খান ।
এ বিষয়ে সত্য উন্মোচন করার লক্ষ্যে ৯ নভেম্বর কালুখালী সরকারি কলেজে উপস্থিত হন এক দল অনুসন্ধানী সাংবাদিকরা এক ঘন্টা অপেক্ষার পরে শিক্ষক আবু বক্কার এর নেতৃত্বে কলেজের একাধিক শিক্ষকদের নিয়ে সংবাদ কর্মীদের সঙ্গে অধ্যক্ষর কক্ষে আলোচনায় বসেন মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ খান ।
কালুখালী সরকারি কলেজের শিক্ষক আবু বক্কার বলেন ইতিপূর্বে একাধিকবার রাতের অন্ধকারে কে বা কারা রাতের অন্ধকারে একাধিক গাছ কর্তন করে নিয়েছে, যার পরিপেক্ষিতে থানায় জিডি করা হয়েছে ।
কাঠ ব্যবসায়ী মোঃ ফজলু মোল্লার ভাষ্য অনুযায়ী ও ধারনকৃত ভিডিও ফুটেজ এর তথ্য অনুযায়ী প্রশ্ন করলে উত্তর এড়িয়ে যাওয়ার স্বার্থে উচ্চস্বরে কথা বলেন কর্তৃপক্ষ । এ বিষয়ে কালুখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ খানের নিকট বক্তব্য চাইলে তিনি বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে একটি জিডির কপি সংবাদ কর্মীদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন এটি আমার বক্তব্য, তবে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি তিনি , তাহলে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে রয়েছে ।
সত্য উদ্ঘাটনে তারপরের দিন ১০ নভেম্বর অনুসন্ধানী টিম রওনা দেয় কালুখালী থানার উদ্দেশ্যে,থানায় গিয়ে অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ জাহেদুর রহমান কে পাওয়া না গেলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় তার সঙ্গে, ওসি বলেন এরকম কোন জিডির বিষয়ে আমার জানা নাই , জিডি কপিটা ওসি দেখতে চাইলে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়,তখন থানাতে উপস্থিত অনুসন্ধানী টিম, ওসি মুঠোফোনে জিডিটি থানায় খোজার নির্দেশনা দিলে ওই সময় এই মর্মে থানার রেস্টারে কোন জিডি হয়েছে বলে পাওয়া যায়নি ।
তার পরের দিন ১১ নভেম্বর কলেজ কতৃপক্ষের জিডির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অনুসন্ধান এটিম ছুটে যায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পাংশা সার্কেলের নিকট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পাংশা সার্কেল দেব্রত সরকার কালুখালী থানায় যোগাযোগ করে জিডির সত্যতা নিশ্চিত করে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেব্রত সরকার বলেন যেইদিন পত্রটি থানায় প্রেরণ করা হয় ঐদিন কালুখালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাক্ষীতে ছিলেন, পরবর্তীতে থানাতে আসার পরে পত্রটি নজরে আসিলে জিডিতে নোট করা হয় । বিষয়টি তদন্তের জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
গাছ কর্তনের সংবাদ পেয়ে সরেজমিনে ছুটে যান কালুখালী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী এজাজ কায়সার, বিষয়ে ক্যামেরায় কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এজাজ কায়সার বলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশক্রমে আমি কলেজ ক্যাম্পাসের সরেজমিনে গিয়ে গাছ কর্তনকারী কাউকে দেখতে পাইনি , সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন বেলা ১০:৩০ থেকে ১১ঃ০০ টার মধ্যে ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্তনকারী কাউকে দেখা পাইনি ।
তথ্য উদঘাটনের জন্য টিম ছুটে যায় কালুখালি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউ এনও ) মোহুয়া আফরোজ এর নিকট,তিনি জানান আমি সংবাদ পেয়ে শিক্ষা অফিসার ও আমার প্রতিনিধি পাঠাই, তিনি ক্যামেরায় কথা বলতে অসম্মতি জানিয়ে বলেন ভিডিও ফুটেজের তথ্য অনুযায়ী ধারণা করা যাচ্ছে দিনের আলোতে গাছ কর্তন করা হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন ।
৯ নভেম্বর ২০২৫ জিডির পত্রে উল্লেখ করা হয় ৮ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ শনিবার রাতে অত্র কলেজ ক্যাম্পাস থেকে মেহগুনি গাছ কর্তন করা হয়েছে । কর্তনকৃত স্থানে পূর্ণাঙ্গ গাছ এবং ৬ টি ছোট-বড় ঘুড়ি এবং আধা মণ সরু ডাল পাওয়া গেছে । উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বে কলেজের নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে লিজ নেওয়া( ৯১ শতাংশ ) জমির দুই জায়গা থেকে দুইবার ক্রয় এবং মেহগুনি গাছ কর্তন করা হয়েছে । এছাড়াও নতুন ৪তলা ভবনের পিছনে লিজকৃত( ৩১শতাংশ ) জমি থেকে একবার অজ্ঞাত নামা লোকজন গাছ কেটে নিয়ে গিয়েছে । উপরিউক্ত ৩ টি ঘটনাস্ট যথাসময়ে কালুখালী থানা কে অবহিত করা হয় । যার প্রমাণপত্র সংযুক্ত করা হলো । এ ব্যাপারে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি । এই মর্মে একটি জিডির পত্র প্রেরণ করে প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ খান, আই ডি নং -৭২৫৯ অধ্যক্ষ কালুখালী সরকারি কলেজ রাজবাড়ী। যার স্মারক নং ৬৩৮। ( ১) তারিখ ০৯/১১/২০২৫ ইং ।
এ বিষয়ে ব্যাপারী ফজলু মোল্লার ক্রয়কৃত গাছ কর্তনকারী লিভার মনিরুল অভিযোগ করে বলেন, শনিবারের সারাদিন এবং রবিবার আনুমানিক বেলা ১১ঃ০০ টা পর্যন্ত গাছ কর্তন করা হয়, ক্রয়কৃত গাছ কর্তন করে চোরের অপবাদ নেয়াটা দুঃখজনক , আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মনিরুল সহ অন্যান্যরা বলেন সত্যটাকে উন্মোচন করে আই নানক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান প্রশাসনের পতি ।
কাঠ ব্যবসায়ী মোঃ ফজলু মোল্লা অভিযোগ করে বলেন দিনের আলোতে প্রকাশ্যে কলেজ কতৃপক্ষের সামনে গাছ কর্ত
মন্তব্য করুন
Design & Developed by BD IT HOST