
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর সিপাহিপাড়া এলাকায় বহুদিন ধরে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকা দিঘাপতিয়ার রাজ পরিবারের একটি পরিত্যক্ত বাড়ীর সুড়ঙ্গ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে কৌতুহল।
স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করে বলেন লোকমুখে শুনেছি মহারানী হেমন্তকুমারী এবং দিঘাপতিয়ার রাজপরিবারের সদস্যরা শহরে এলে এই প্রাসাদসদৃশ স্থাপনাতেই অবস্থান করতেন। সুড়ঙ্গ উন্মোচিত হওয়ার পর এলাকাবাসীসহ গবেষকদের মধ্যে নতুন করে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে এর গঠন, উদ্দেশ্য এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব জানার বিষয়ে।
পুরাতন ভবনগুলোর স্থাপত্য নিয়ে গবেষকরা জানান,অতীতে ভবনের ভিত্তি শক্ত রাখা, মাটির উচ্চতা সমান করা এবং ঘরকে স্বাভাবিকভাবে শীতল রাখার উদ্দেশ্যে নিচু খিলানাকৃতি কাঠামো নির্মাণ করা হতো। রাজশাহীর পুরোনো কোর্ট ভবনেও একই ধরনের স্থাপত্য উপাদান দেখা যায়।
স্হানীয় স্থাপত্য গবেষক আহমেদ সফি সাংবাদিকূের বলেন, পুরোনো বাড়িগুলোর নিচে অর্ধবৃত্তাকার খিলান থাকত। সাধারণত ৩–৪ ফুট সিঁড়ি বেয়ে ঘরের মেঝেতে উঠতে হতো। কিন্তু গত কয়েক দশকে শহরের রাস্তা পর্যায়ক্রমে উঁচু হওয়ায় বাড়ির উঠানও মাটি দিয়ে ভরাট করতে করতে এসব খিলান ঢেকে যায়। এর ফলে পাশের জেলখানার পয়ঃনিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়ে এবং এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরে নোংরা দুর্গন্ধময় ছিল।
এ বিষয়ে বিশিষ্ট প্রত্নতত্ত্ববিদ ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, অতীতের অধিকাংশ রাজকীয় ভবনেই এমন নকশার ব্যবহার ছিল। আর্দ্রতা প্রতিরোধ, ঘর শীতল রাখা এবং পানিবান্ধব নির্মাণসামগ্রীর ব্যবহার—এসব কারণে ভবনের ভিত্তিতে এমন কাঠামো সুড়ঙ্গসদৃশ মনে হলেও এটি মূলত একটি প্রকৌশলগত নকশার অংশ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভুল ধারণা ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি না করে এ ধরনের স্থাপত্যকে যথাযথভাবে ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে দেখা উচিত।
মন্তব্য করুন
Design & Developed by BD IT HOST