রুপপুরে নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে চায় রাশিয়া,আগ্রহ সরকারের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১ মাস আগে

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আরও দুটি ইউনিট নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া। বাংলাদেশও এ প্রস্তাবে আগ্রহ দেখিয়েছে। মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে রাশিয়ার পারমাণবিক জ্বালানিবিষয়ক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সেই লিখাচেভ এই প্রস্তাব দেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম। রোসাটমের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দুই পক্ষ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চলমান কাজে অগ্রগতি, শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহারের বিষয়ে মস্কো–ঢাকা কৌশলগত সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। লিখাচেভ বলেন, চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। রূপপুরে আরও দুটি ইউনিট নির্মাণের বিষয়ে রোসাটমের মহাপরিচালক বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় আরও দুটি ইউনিট নির্মাণের ব্যাপারে বাংলাদেশ গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বহুমুখি (পারমাণবিক) গবেষণা রিঅ্যাক্টর বা চুল্লি নির্মাণের বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানান অ্যালেক্সেই লিখচেভ। গবেষণা চুল্লি বিজ্ঞান ও নিউক্লিয়ার মেডিসিনের ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুরে রুশ সহায়তায় নতুন দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট (ইউনিট–৩ এবং ইউনিট–৪) নির্মাণের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। রোসাটমের মহাপরিচালক নতুন দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ শুরু করতে কারিগরি সমীক্ষা দ্রুততম সময়ে শুরু করার প্রস্তাব দেন। রোসাটমের মহাপরিচালক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারিগরি বিভিন্ন বিষয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। তিনি জানান, এরই মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় প্রতিটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। প্রথম ইউনিট চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে উৎপাদনে আসতে পারে। তবে ইউনিট–১ ও ইউনিট–২ থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে যথাক্রমে ২০২৫ ও ২০২৬ সালে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটে ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানির বর্জ্য রাশিয়ায় ফেরত নিতে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন। জবাবে রোসাটমের ডিজি পারমাণবিক জ্বালানির বর্জ্য রাশিয়ায় ফেরত নেওয়ার বিষয়ে রুশ সরকারের পক্ষে নিশ্চয়তা দেন এবং এ বিষয়ে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা যথাসময়ে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দেন। গতকাল সোমবার ঢাকা সফরে আসেন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সেই লিখাচেভ। এই সফরে তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও গ্রিন সিটি আবাসিক এলাকা পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য, রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট নির্মিত হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। প্রকল্পের কারিগরি নকশা প্রণয়ন ও ঠিকাদারির দায়িত্বে রয়েছে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান রোসাটম।

  • আগ্রহ সরকারের
  • রুপপুরে নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে চায় রাশিয়া