• Home
  • সারাদেশ
  • আজ ১৬ই ডিসেম্বর ৫১তম বিজয় দিবসে বৈষম্যহীন নিরাপদ ও শান্তিময় সুন্দর সোনার বাংলাদেশ গড়া হোক
Image

আজ ১৬ই ডিসেম্বর ৫১তম বিজয় দিবসে বৈষম্যহীন নিরাপদ ও শান্তিময় সুন্দর সোনার বাংলাদেশ গড়া হোক

আজ মহান বিজয় দিবস। এই দিনে আমরা বঙ্গবন্ধু’র নির্দেশে অনেক ত্যাগ, তিতিক্ষা আর সাধনার বিনিময়ে অপশাসকের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিলাম। আর ১৬’ই ডিসেম্বরের পটভূমি আমাদের বাঙালিদের সবার জানা। তাই এই দিনটি নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই’না। এই ত্যাগ, তিতিক্ষা আর সাধনার পরিণাম হিসেবে বিশ্বকে আলোড়িত করা এই ১৬’ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের কথা ও বঙ্গবন্ধু সমেত সকল শহীদদের স্বরণ করি বিনম্র শ্রদ্ধাভরে ও স্মরণ করি জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের। প্রতিটা বছর’ই ১৬’ই ডিসেম্বর বিজয়ের মাস এলে বিজয় নিয়ে হইচই পড়ে যায়। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে আবেগের বহিঃপ্রকাশের কোন কমতি থাকে’না। রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা এমনকি পাড়া-মহল্লায় কিশোর ও তরুণদের ক্লাব গুলোও লেগে যায় বিজয় দিবস পালন করতে। টিভি, রেডিও, সাউন্ড বক্স ও মাইকে বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বেজে উঠে। বেজে উঠে সেই জাগরণের গান গুলি, যেগুলি আমাদের অনুপ্রেরণা ও সাহস জুগিয়েছে মুক্তিযুদ্ধে। এ’দিনে চারিদিকে উৎসব আনন্দের পরিবেশ বিরাজ করে, যার ইনটেনসিটি ও বিচিত্রতা যেন দিন দিন বাড়ছে। এটা সত্যি গর্বের। তারুণ্যের এই উচ্ছ্বাস দেখে ভালোই লাগে। গর্ববোধ ও প্রাণভরে উল্লাসের নিঃশ্বাস ফেলি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যারা একাত্তরে ছিলো টগবগে তরুণ আর আজ তারা বৃদ্ধ অথবা প্রায় বৃদ্ধ তাদের কেমন লাগে এই সব দিবস গুলিতে বা জাতীয় উৎসব উৎসব পরিবেশে? কোন কোন মুক্তিযোদ্ধার এবং যারা ৭১’এ সজন হারিয়েছেন অথবা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের অনেকের অনুভূতিই হয়’তো আমার অনুভূতির সঙ্গে মিলে যেতে পারে। স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস ইত্যাদি উৎসব মুখর অনুষ্ঠানগুলি আমায় দূর্বার আকর্ষণ করে ও ভিষণ আনন্দ দেয়, আর হৃদয়ের গহিনে লুকিয়ে থাকা কোন একটা কষ্ট যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। খুশির আরেকপাশে কষ্ট কষ্ট ভাব যেন মন ও দেহকে আচ্ছন্ন করে রাখে।

আবেগে চোখ দিয়ে জল গড়ায়। সেই চোখের জল গোপন করতে আপ্রাণ চেষ্টা করি। কিসের জন্য এবং কেন এই কষ্ট কষ্ট ভাব ও অনুভূতি? আমার এই কষ্ট যারা বিজয় দেখে যেতে পারেনি, শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্য। যারা আপন জনদের হারিয়েছেন তাদের জন্য। এই বিজয়ের জন্য যারা নির্যাতিত হয়েছেন, অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্ট ভোগ করেছেন তাদের জন্য। একাত্তরে ১৬ই ডিসেম্বরের পড়ন্ত বিকেলে যদিও লক্ষ লক্ষ মানুষ ঢাকার রাস্তায় নেমে এসেছিল বিজয়ের আনন্দে। কিন্তু তার পাশাপাশি আপন জনকে হারানোর নিদারুণ উৎকণ্ঠা নিয়ে হাজারো মানুষও রাস্তায় নেমে এসে ছিলেন প্রিয় জনের খোজে। তার খবর আমরা ক’জন জানি? তাঁরা ছুটে গিয়েছিলেন থানা থেকে থানায়, ক্যাম্প থেকে ক্যাম্পে এবং জেল খানা থেকে জেল খানায়। কিন্তু ক’জনে ফিরে পেয়েছিলেন তাঁদের প্রিয় জনকে? ফিরে পাওয়ার ভাগটা ছিল খুবই নগণ্য। যাইহোক, আমার ভাবনা হলো সব ধরনের বৈষম্যহীন একটি নিরাপদ সুন্দর বাংলাদেশ যেখানে একজন আরেকজনকে শত্রু’না ভেবে একে অন্যের মিত্র হয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের জন্য কাজ করে যাবে সবাই। যেখানে নিজের মানুষের ভিড়ে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে কাউকেই ভাবতে হবে’না। স্বাধীন দেশের একটি ক্ষুদ্র বস্তুও হবে প্রতিটি মানুষের জন্য নিরাপদ। মাথার উপরের এক আকাশ আর পায়ের নিচের একই মাটির মানুষের মধ্যে থাকবে’না কোনো ব্যবধান ও দন্দ। আর এসব উদ্দেশ্যেই’তো আমাদের মুক্তিযুদ্ধ করা, প্রাণ বিলিয়ে দেয়া অতঃপর বিজয় নিয়ে আসার মূলে ছিল। আমাদের স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যাশা ছিল দেশটা এমনি হবে। এত কষ্টে অর্জিত বিজয় কেবল তখন পূর্ণতায় মূল্যায়ন হবে যখন নিজেরা নিজেদের আপন ভাবতে পারবো। যেদিন যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে পারবো জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের, যেদিন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা’রা অবহেলা আর লাঞ্ছিত হবে’না কোন পাতি মস্তান আর অসাধু নেতাদের কাছে, তবেই এই বিজয়ের পূর্ণ স্বাথর্কতা নিশ্চিত হবে।

১৯৭১ সালে ২৫’শে মাচের্র পর থেকে দীর্ঘ ৯ মাস বাংলার দামাল ছেলেরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীনতার দুয়ারে নিয়ে উপনীত হয়।হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। ফলে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণের দিন এসে ধরা দেয়। পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ, নিপীড়ন ও দুঃশাসনের জাল ভেদ করে ১৯৭১ সালের এ’দিনে বিজয়ের প্রভাতী সূযের্র আলোয় উকি দিয়ে উঠেছিল বাংলার প্রভাতের শিশির ভেজা এই মাটিতে। অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাড়ে তেইশ বছরের নিবির্চার শোষণ, বঞ্চনা আর নিযার্তনের কালো অধ্যায়। এই ১৬’ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস, মুক্তির দিবস।
পৃথিবীর ইতিহাসে সেই দিন ৯৩হাজার পাকিস্তানি সোলজার বাংলার মাটিতে আত্মো সমাপন করেছিল। যা পৃথিবীর কোনো দেশে এই ধরনের বিজয়ের ইতিহাস নেই।

বিজয় দিবস আসলে আমাদের ভাবনা মনের হৃদয়ে উঁকি দিতে থাকে। তাই এ’দিন আমাদের সবার অতি প্রিয়, অতি আনন্দের দিন। এই দিনটির মাধ্যমে আমরা নতুন প্রজন্মকে ও বিশ্বকে বারবার মনে করিয়ে দিই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা, শহীদদের কথা। মনে করিয়ে দেয় বাংলাদেশ নামে একটি দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান, ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালে সবর্স্ব উজাড় করে এগিয়ে আসার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের তারুণ্যের অবদান অপরিসীম। এই দিনকে নিয়ে বড়দের মতো আমাদের তরুণ প্রজন্মের সন্তানদের কল্পনায়ও উঁকি দেয় কত কথা আর কত স্বপ্ন। কিন্তু বারবার আমার শুধু মনে হয়, যারা নিজেদের জীবনের বিনিময়ে এই সোনার বাংলা উপহার দিল, তাদেরকে কতদিন আমাদের হৃদয়ে ঠাই দিয়েছি? তাদের এই আদর্শকে ক’জন নিজেদের মাঝে লালন করেছি? কখন’ও কি ভেবে দেখেছি যে বাংলার স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে তারা নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করে দিল? সেই স্বপ্নের বাংলার দেশপ্রমিক মানুষ কি আমাদের মাঝে বর্তমান আছে?।

Releated Posts

নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অভিযোগ বার্তা’র প্রকাশক ও সম্পাদক

নিউজ ডেস্কঃ দেশ-বিদেশের সকল পাঠক, প্রতিনিধি ও শুভানুধ্যায়ীদের ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দৈনিক অভিযোগ বার্তা’র প্রকাশক ও সম্পাদক…

ByByFeroz Ahmedজানু ১, ২০২৫

নাটোরে নূর এ মাদীনা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার সবক প্রদান ও দোয়া মাহফিল

রাজশাহী ব্যুরো রাজু আহমেদ ও জুয়েল মন্ডল : নাটোর সদরের বলারীপাড়ায় নূর এ মাদীনা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার অভিভাবক সমাবেশ,…

ByByNews Editorডিসে ২৪, ২০২৪

ওয়েস্ট ইন্ডিজ কে হারিয়ে টি২০ তে সিরিজ জয়

স্পোর্টস ডেস্কঃ আর্নোস ভেল গ্রাউন্ডে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৭ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন ম্যাচের…

ByByFeroz Ahmedডিসে ১৮, ২০২৪

বাজার সিন্ডিকেটে কারসাজিতে বোতলজাত সয়াবিন তেল সংকট

অভিযোগ বার্তা ডেস্কঃ বাজার থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেল রীতিমতো উধাও হয়ে গেছে। বিশেষ করে, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এক থেকে…

ByByFeroz Ahmedডিসে ৮, ২০২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Design & Developed by BD IT HOST