শীতকাল এলেই মনটা কেমন যেন উড়ু উড়ু করে ! সে যতই কলকাতায় জয়নগরের অর্জিনাল মোয়া না খেতে পায় তবুও মন বলে শীতে মুখ মিষ্টি আলাদা করে করতেই হয়; আমাদের শহরের শীত কোনকালেই তাড়াতাড়ি পড়ে না আর আমিও বেশি অপেক্ষা করতে পছন্দ করি না; তাই শীত একটু গায়ে লেগেছে কি না… দৌড় লাগালাম মিষ্টি মুখ করতে; তবে একা যেতে পছন্দ করি না আমি; চললাম বন্ধু বান্ধব মিলে; আজ সেই মিষ্টি মুখ করার কিছু গল্প রইল। কিভাবে যাবেন? কলকাতা থেকে বাসে, লোকাল ট্রেনে অথবা নিজেদের গাড়িতে খুব সহজেই যাওয়া যায়; নিজেদের গাড়িতে গেলে ডানকুনি – মশাট রাস্তা ধরে যাবেন; মশাট মোড় থেকে বাঁ দিকে গেলে আঁইয়া গাংপুর; বাসে গেলে দক্ষিণেশ্বর থেকে ২৬সি বাসে একদম আঁইয়া ষষ্ঠিলতায় নামতে পারবেন; বা ২৬ নং বাসে গেলে আঁইয়া পাঁচমাথায় নেমে হেঁটে ১০মিনিট; আর ট্রেনে এলে হাওড়া থেকে ডানকুনি স্টেশনে এসে বাস (২৬,২৬সি) ধরে বা টোটো করে সরাসরি এখানে আসতে পারেন। খাবেন নাকি দেখবেন? এই গ্রামে অনেক আগে থেকেই গোয়ালা ছিল; অনেকের নিজস্ব মিষ্টির দোকান বা কেউ কেউ মিষ্টির দোকানের কর্মচারি ছিলেন বলে উনারা বললেন; বর্তমানে প্রায় ২৫টা পরিবার রাবড়ি তৈরির সাথে যুক্ত; ফলে এখানে এলে নিজের চোখে রাবড়ি তৈরি দেখতে পারবেন; একদম প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখতে হলে ৬০ থেকে ৭৫মিনিট অপেক্ষা করতে হবে; দেখতে দেখতে তো খাওয়া চলতেই পারে; ফলে একদম তাজা রাবড়ি নিয়ে নিন; উনারা ১০০ গ্রামের ছোট্ট কাপে দেবে; মিষ্টি বা মিষ্টি ছাড়া সবরকম খেয়েই দেখতে পারেন; আর সাথে পাবেন সরভাজা; তবে সরভাজা তৈরি দেখতে পাওয়া সময়ের ব্যাপার; যেহেতু এটা তৈরি অনেক সময় সাপেক্ষ ফলে সাধারণত দেখতে পাওয়া যায় না; খেতে খেতে পছন্দমত বাড়ির জন্য প্যাক করে নিতে ভুলবেন না যেন। শুধুই রাবড়ি পাবেন এখানে যাওয়া শুধুই রাবড়ি খাওয়ার জন্য এবং অবশ্যই দেখার জন্য; কলকাতার অনেক দোকানে যদিও রাবড়ি তৈরি দেখেছি তবুও এই গ্রামে এসে এক টানা তৈরি দেখা বা বিভিন্ন বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখার একটা আলাদা অভিজ্ঞতা তো আছেই; এখানে গরুর দুধ (যদিও মোষের দুধ থেকেও হয়) থেকে তৈরি বিভিন্ন রকমের রাবড়ি পাবেনঃ সাধারণ মিষ্টিযুক্ত রাবড়ি – ৩০০টাকা/কেজি,হালকা মিষ্টিযুক্ত রাবড়ি – ৩৫০টাকা/কেজি,মিষ্টিছাড়া রাবড়ি – ৪০০টাকা/কেজি গুড়ের রাবড়ি – ৩৫০-৪০০টাকা/কেজি, সরভাজা – ১০-১২/পিস এছাড়াও বাড়িতে পাতা গাওয়া ঘি পাবেন ৭০০ থেকে ১০০০টাকা কেজি দরে। ★কতটা সময় ব্যায় হবে★ কলকাতা থেকে আমরা ট্রেনে গিয়েছিলাম; ট্রেনে ২৫মিনিট এবং বাসে আধ ঘন্টা মত সময় লাগবে; তবে ২৬ বা ২৬সি বাসের সংখ্যা খুবই কম; গ্রামে ঢুকে এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখতে বেশ সময় লাগবে; আমরা শুধু গেলাম খেলাম না করে অনেকটা সময় কাটিয়ে থাকি এইরকম ঘোরাগুলোই; যারা তৈরি করছেন তাদের কথা, কিভাবে শুরু করলেন বা রোজকার যাপনের কথা… প্রায় ৪ ঘন্টা সময় ছিলাম ।