কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় জাসদ নেতাসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

News Editor
প্রকাশ: ১০ মাস আগে

মোঃ জিয়াউর রহমান , কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আলোচিত কৃষক হত্যা মামলায় জাসদ নেতা কারশেদ আলমসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আবীর পারভেজ এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে কারশেদ আলম, তার মেজভাই হামিদুল ইসলাম ও তার বড় ভাই আসাদুল ইসলামের ছেলে রাসেল। এ মামলায় অপর ৮ আসামিদের খালাস দিয়েছেন আদালত।

কারশেদ আলম কুষ্টিয়া জেলা জাসদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রূপকার ও মুক্তি কামনায় গঠিত বিশেষ বাহিনী নিউক্লিয়াসের সদস্য কাজী আরেফ আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী। তিনি কাজী আরেফ স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক।

রায় ঘোষণার পরপর শত শত জাসদ নেতাকর্মী আদালতে জড়ো হন। দণ্ডপ্রাপ্তদের পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীরা বলেন, ২০১২ সালের ১৫ আগস্ট বিকেলে লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে কৃষক শাহাজুলের গরু খেত খাওয়ার কারণে প্রতিপক্ষের লোকেরা তাকে মারধর করে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাজুলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বংশীয় ও সামাজিক দ্বন্দ্বের জেরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দণ্ডপ্রাপ্তদের মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। অথচ যারা তাকে হত্যা করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেনি। নিহতের চাচাতো ভাই আশরাফুল ইসলাম ঘটনার কয়েকদিন পরে কারশেদ আলম ও তার পরিবারের লোকজনদের বিরুদ্ধে মামলা করে। আমরা এ রায় মানি না। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।

জাসদ নেতা কারশেদ আলমের পরিবারের লোকজন বলেন, বংশের দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে আমাদের পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ যারা নিহত সাহাজুলকে মারপিট করে হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেনি বাদীপক্ষ। এঘটনায় আমরা ক্ষোভ প্রকাশ করছি। কারশেদ আলম দোষী না। আমরা এই রায় মানি না। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৫ আগস্ট রাত সাড়ে ৭টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ শাহাজুলের মাথায় আঘাত করে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক সপ্তাহ পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

 

মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ৮ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার পর পরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

এবিষয়ে আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, কৃষক শাহাজুল হত্যা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এসময় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ মামলায় অপর আসামিদের খালাস দিয়েছেন আদালত।