দেওয়ানগঞ্জে বাড়িঘর ভাঙচুর ও ইমামকে অপমানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

News Editor
প্রকাশ: ১ বছর আগে

নিজস্ব প্রতিনিধি: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে মসজিদের অবমাননা, মুসল্লিদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ইমামের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। শুক্রবার বিকালে উপজেলার সরদারপাড়ার তৌহিদি মুসলিম জনতার ব্যানারে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি বাহাদুরাবাদ সরদারপাড়া জামে মসজিদ থেকে বের হয় এবং দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার সামনে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে আটটার দিকে সরদারপাড়া নাদু বেপারীর ছেলে জাকির হোসেন সরদারপাড়া জামে মসজিদের ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগকে একা পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারপিটের হুমকি দেয়। বিষয়টি তৎক্ষনাৎ ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগ মসজিদে এসে তারাবিহের নামাজের পূর্বে মুসল্লিদের জানান। মুসল্লিগণ জাকির হোসেনকে ওই বিষয়ে জবাবদিহিতা করলে জাকির হোসেন গালিগালাজের বিষয়টি অস্বীকার করে তবে মারপিটের হুমকির কথা স্বীকার করে। সে সময় বিষয়টি নিয়ে জাকির হোসেনের অভিভাবককে জানানো হয় এবং পরদিন শুক্রবার বাদ জুমা নেতৃস্থানীয়রা বসে মিমাংসার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময় কিছু উত্তেজিত কিছু মুসল্লি জাকির হোসেনের বাড়িতে ঢিল ছুঁড়ে।

এবিষয়ে স্থানীয়রা জানান, তারাবিহের নামাজ শেষে মুসল্লিগণ যে যার বাড়িতে চলে যান। মুসল্লিগণের প্রতি রাগাম্বিত হয়ে জাকির হোসেন মদ খেয়ে মসজিদে এসে প্রসাব করে এবং মুসল্লিগণকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে জাকির হোসেন থানায় অভিযোগ করে পুলিশ এনে ওই মসজিদের ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগকে ধরিয়ে দেয়। ইমামকে ধরার বিষয়টি সে সময় গ্রামে মুসল্লিগণ শুনলে তারা দলে দলে ছুটে আসে এবং পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করে। প্রতিবাদের মুখে পুলিশ ওই মসজিদের ইমাম নুর মোহাম্মদ সোহাগকে ছেড়ে দেন।পুলিশ চলে গেলে বিক্ষিপ্ত গ্রামবাসী অভিযুক্ত জাকির হোসেনের বাড়ি ভাঙচুর করে। সে সময় জাকির হোসেন ও তার পরিবার পালিয়ে যায়। শুক্রবার ৭ এপ্রিল বিকেলে সরদারপাড়া গ্রামবাসী ও তৌহিদি মুসলিম জনতা ওই গ্রাম থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ছয় কিলোমিটার অতিক্রম করে দেওয়ানগঞ্জ থানার সামনে এসে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি শ্যামল চন্দ্র ধর উপস্থিত মুসুল্লিদের আসস্থ করলে বিক্ষোভকারী মুসুল্লিগণ শান্ত হন। এবং প্রতিবাদ স্থগিত করেন।

সরদারপাড়া গ্রামের মো. ইয়াদ আলী জানান, জাকির হোসেন নেশাখোর প্রকৃতির মানুষ। প্রতিদিন সে মদ গাঁজাসহ বিভিন্ন নেশা সেবন করে। সে কারণে সে রমজান মাসে সাহরীর অনুষ্ঠানের সময় মসজিদের মাইকে রোজাদারদের ডাকতে বাঁধার সৃষ্টি করে। বিভিন্ন সময় ওই সমজিদ কর্তৃপক্ষকে গালিগালাজ করে। তিনি জাকির হোসেনের অন্যায়ের যথাপোযুক্ত বিচার দাবি করেন।সরদারপাড়া গ্রামের নুরু মিয়া জানান, জাকির হোসেন যে অন্যায় করেছে তার জন্যে গ্রামবাসী তৌহিদি মুসলিম জনতা বিক্ষোভ মিছিল করে। জাকির হোসেন মদ-গাঁজা সেবন করে। সে এলাকায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে।

সরদারপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ভূক্তভোগী নুর মোহাম্মদ সোহাগ জানান, জাকির হোসেন আমাকে একা পেয়ে গালিগালজ ও মারপিটের হুমকি দিয়েছে। এ ছাড়াও মসজিদে প্রসাব করে, মুসল্লিগণকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে গোটা মুসলিম জাতিকে অপমান করেছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জাকির হোসেনকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোটে কল করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি শ্যামল চন্দ্র ধর জানান, বিক্ষোভের বিষয়টি জানি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।