• Home
  • অন্যান্য
  • বালাগঞ্জের হামছাপুর গ্রামের রাক্ষসী কুশিয়ারা নদীর বাড়ছে ভাঙ্গন! আতঙ্কে এলাকাবাসী
Image

বালাগঞ্জের হামছাপুর গ্রামের রাক্ষসী কুশিয়ারা নদীর বাড়ছে ভাঙ্গন! আতঙ্কে এলাকাবাসী

কুশিয়ারা নদীতে বাড়ছে ভাঙ্গন, আতঙ্কে এলাকাবাসী সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলায় পূর্ব পৈলন পুর ইউনিয়নের হামছাপুর কুশিয়ারা নদীতে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র হচ্ছে নদী ভাঙ্গন দিন দিন তীব্র হচ্ছে এই খবর নতুন নয়। নদী ভাঙনে মানুষ নিঃস্ব হলেও তাদের কান্না ‘সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে’র কান পর্যন্ত পৌঁছায় না। ‘বড় বড়’ জনপ্রতিনিধি, ‘দায়িত্বশীল’ কর্তারা ভাঙন রোধে বারবার আশ্বাস দিলেও সেই আশ্বাসের ওপর আর যেন ভুক্তভোগীরা বিশ্বাস রাখতে পারছেন না। তারা এখন নদীভাঙনকে ‘নিয়তি’ বলেই মেনে নিতে চাচ্ছেন। বালাগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীতে ক্রমশই পানি কমতে। এতে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। ফলে আবাদি জমিসহ কুশিয়ারার পারের বাসিন্দাদের বসতবাড়ি বিলীন হচ্ছে। নদী তীরবর্তী কয়েকটি এলাকার মানুষ এখন নদীভাঙ্গন আতঙ্কে দিন পার করছেন। স্থানীয়রা জানান, বালাগঞ্জ উপজেলার হামছাপুরের এলাকায় গত কয়েকদিন ধরেই তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন তীব্র হওয়ায় কুশিয়ারার পারের অনেক বাসিন্দা ভিটামাটি ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে- হামছাপুর, রশিদপুর, জালাল পুর,গালিমপুর,পৈলন পুর,এলাকার হাজার বিঘা ফসলি জমি ও সরকারী-বেসরকারী স্থাপনা। শুরুতে বলেছিলাম নদীভাঙনে নিঃস্ব মানুষের কান্না ‘উপরতালা’ পর্যন্ত পৌঁছায় না। যদি সেই কান্নার আওয়াজ পৌঁছাতো তাহলে সরকার বাস্তবতা অনুধাবন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতো, সরকারের দায়িত্বশীলরা এসব ঢিলেমি থেকে বের হয়ে আসতেন। নদীভাঙন রোধে বাঁধ দেওয়া ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মূল দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পাউবো ছাড়াও পানিস¤পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আরও কয়েকটি সংস্থা রয়েছে, যারা নদীভাঙন স¤পর্কিত পূর্বাভাস দেন, গবেষণা করেন, নদী ব্যবস্থাপনার উপযোগী মডেল ও নকশা তৈরি করেন। এসব সংস্থার রিপোর্ট এবং মাঠপর্যায়ের প্রকৌশলীদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে পাউবো নদীভাঙন রোধের পরিকল্পনা ও প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠায় অনুমোদন ও বাজেট বরাদ্দের জন্য। অনুমোদন ও বরাদ্দ পাওয়া গেলেই কাজে হাত দেওয়া হয়।সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) নামে একটি গবেষণা সংস্থা রয়েছে পানিস¤পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে। উপগ্রহের মাধ্যমে প্রাপ্ত ছবি ও তথ্যের ভিত্তিতে এ সংস্থা নদীভাঙনের পূর্বাভাস দিচ্ছে ২০০৪ সাল থেকে। মূলত দেশের প্রধান নদী যমুনা, গঙ্গা ও পদ্মার তীরের কোনো কোনো স্থানে ভাঙন হতে পারে এবং নদীর গতিপথ বা স্রোতধারা কোথাও পরিবর্তিত হতে পারে কিনা সে স¤পর্কেই সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়ে থাকে। আমরা মনে করি সেই পর্যবেক্ষণে দেশের দীর্ঘতম নদী কুশিয়ারা ও সুরমাকেও অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি। সিইজিআইএস ছাড়া আরও যেসব প্রতিষ্ঠান নদী স¤পর্কিত গবেষণা করে, তার মধ্যে ফরিদপুরের নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডাব্লিউএম) অন্যতম। এ দুটি প্রতিষ্ঠান বন্যার পূর্বাভাস, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানিস¤পদ ব্যবস্থাপনার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে এবং সরকারকে রিপোর্ট ও সুপারিশ প্রদান করে। সবকটি সংস্থার পূর্বাভাস ও রিপোর্ট এবং নিজস্ব প্রকৌশলীদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে পাউবো নদীভাঙন রোধের কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করে। পানিস¤পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান নদীভাঙন নিয়ে গবেষণা ও সুপারিশ করলেও ভাঙনরোধের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাউবোর। কিন্তু এক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাব লক্ষ করা যায়। পাউবো এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় গড়ে তোলার দায়িত্ব উচ্চতর কর্তৃপক্ষ তথা মন্ত্রণালয়ের। পানিস¤পদ মন্ত্রণালয়ের সার্বক্ষণিক নজরদারি পাউবো ও অন্যান্য সংস্থার মধ্যে কার্যকর ও জোরদার সমন্বয় সৃষ্টি করতে পারে, যার মাধ্যমে নদীভাঙন রোধের কার্যক্রম ফলপ্রসূ করা সম্ভব। কুশিয়ারার পারের বাসিন্দা হামছাপুর মাকড়সী কালীগঞ্জ মাদ্রাসা মুহতামিম মাওলানা মিছবাহ উদ্দীন মিছলু ও সাংবাদিক হেলাল আহমদ বলেন, নদীতে পানি কমছে, তাই ভাঙ্গনও শুরু হয়েছে। এখনই প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নিলে আশপাশের কয়েকটি এলাকার মানুষও নদী ভাঙ্গনের শিকার হবেন।নদীভাঙন রোধ জনস্বার্থে অতি গুরুত্বপূর্ণ। এ কাজের জন্য কোনো পর্যায়েই দীর্ঘসূত্রতা বা বিলম্ব কাম্য নয়। বরং এ ধরনের প্রকল্পকে জরুরি ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দিয়ে পর্যাপ্ত তহবিল বরাদ্দ করা উচিত। আমরা বিশ্বাস করি, সদিচ্ছা থাকলে নদীভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন কিছু নয়। নদীভাঙন বন্ধ করা গেলে লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা বাঁচবে। আশ্রয় ও জীবিকার সন্ধানে তারা শহরাঞ্চলে ছুটে আসবে না। বিস্তীর্ণ ফসলের জমি নদীতে তলিয়ে যাবে না, জনপদ, অবকাঠামো বিলুপ্ত হওয়া থেকে রক্ষা পাবে। বাস্তবতার নিরিখে আমরা বলতে চাই, বালাগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন রোধে কার্যকর এবং স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আমরা চাই না, নদীভাঙনে আর একজন মানুষও নিঃস্ব হোক। আমরা সরকারের কাছে আবারো দাবি জানাই, বালাগঞ্জের নদীভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিন।

Releated Posts

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষে সহিংসতা মুক্ত বিশ্ব গড়ার ডাক

মো.নজরুল ইসলামঃমানিকগঞ্জ: “নারী-কন্যার সুরক্ষা করি, সহিংসতা মুক্ত বিশ্ব গড়ি” এই স্লোগান কে সামনে রেখে আজ মানিকগঞ্জ শহীদ রফিক…

ByByFeroz Ahmedনভে ২৬, ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে লালন ভক্তদের সাধুসঙ্গ আপওির মুখে বন্ধ

বুলবুল আহামােদ,নারায়নগঞ্জঃ নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় মুসল্লি ও বিভিন্ন ইসলামি দলের আপত্তির মুখে দুই দিনব্যাপী নরসিংহপুর এলাকায় ‘মুক্তিধাম আশ্রম ও…

ByByFeroz Ahmedনভে ২৩, ২০২৪

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল নির্বাচনে আওয়ামী পন্থীদের নিরস্কুশ জয়

অভিযোগ বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে আওয়ামী পন্থী নীল দল। সভাপতি, সহ-সভাপতি…

ByByFeroz Ahmedনভে ২১, ২০২৪

বাউবি’র বিএ/বিএসএস (সম্মান) ও এলএলবি (অনার্স) প্রোগ্রামের পরীক্ষা শুরু

বার্তা প্রেরক, আরিফুল ইসলাম : আজ ১৫ নভেম্বর ২০২৪ বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব নির্ধারিত বিএ, বিএসএস (সম্মান) ও…

ByByNews Editorনভে ১৫, ২০২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Design & Developed by BD IT HOST