বিশ্ব “মা” দিবস নিয়ে আমার কিছু কথা -ইকবাল আহমেদ লিটন

News Editor
প্রকাশ: ১ বছর আগে

মায়ের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দিয়ে শুরু করছি আমার লেখা। মাগো মায়ার বাঁধনে বেঁধে রেখেছিলে আমায় সুখে-দুঃখে তোমারি আচলে। শুধুমাত্র নিদৃষ্ট একটি দিন নয় প্রতিটি দিন হউক “মা” এর জন্য। আমি মনে করি- একদিনের জন্য “মা” দিবস পালন এটি হচ্ছে পশ্চিমা সংস্কৃতি “মা” দিবসে আসলেই সবাই মাকে নিয়ে কত কিছু লিখি “মা” দিবসের কোন নির্দিষ্ট তারিখ নেই।

হয়তো ঐতিহাসিক প্রাসঙ্গিকতায়-
মে – মাসের দ্বিতীয় রবিবার “মা”দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে, মা” দিবসে কি শুধু মায়ের কথা মনে পড়ে। বছরের বাকি -৩৬৪- দিন কেন বাদ যাবে? তাই বছরের -৩৬৫- দিন হোক মমতাময়ীর জন্য। “মা”কে জানাই অনেক অনেক ভালোবাসা ও বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।

এই পৃথিবীতে অসংখ্য খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু একজনও খারাপ “মা”নেই ।”মা” মানে পরম মমতা আর গভীর বিশ্বাস। তাই আজকে “মা” দিবসকে সামনে রেখে প্রতিপাদ্য- “মা” দিবসে সকল সন্তানের মনুষ্যত্ব হোক সুন্দর আর বৃদ্ধাশ্রম নিপাত যাক।

“মা” অংক বোঝে না….
—————————–
১টা রুটি চাইলে ২টা নিয়ে আসে।
কোথাও যাওয়ার সময় ২০ টাকা চাইলে ৫০ টাকা পকেটে ঢুকিয়ে দেয়।

“মা” ইংরেজীও বোঝে না….
————————————
I hate u বললে উল্টে না বুঝে সন্তানকে ভালোবেসে বুকে টেনে নেয়।

“মা” মিথ্যেবাদী….
———————–
না খেয়ে বলে খেয়েছি, পেটে ক্ষুধা থাকা সত্ত্বেও নিজে না খেয়ে প্রিয় খাবারটা সন্তানের জন্য যত্ন করে তুলে রাখে।

“মা” বোকা….
—————–
সারাজীবন কলুর বলদের মতো রান্নাঘর আর আমাদের ভালোমন্দের পিছনে কাটিয়ে দেয়।

“মা” চোর….
—————-
বন্ধুদের সাথে পিকনিকে যাবার বাহানা করলে- রাতেই বাবার পকেট থেকে টাকা চুরি করে সন্তানদের দিয়ে দেয়।

“মা” নির্লজ্জ….
——————–
“মা” কে কতবার বলি- আমাদের জিনিসে যেনো হাত না দেয়, তবুও “মা” নির্লজ্জের মতো আমাদের এলোমেলো পড়ে থাকা জিনিসগুলো নিজের হাতে গুছিয়ে রাখে।

“মা” বেহায়া….
——————
আমরা কথা না বললে জোর করে এসে বেহায়ার মতো গায়ে পড়ে কথা বলে। রাতে ঘুমের ঘোরে আমাদের দরজা দিয়ে উঁকি মেরে দেখে যায়।

মা’য়ের কোন কমনসেন্স নেই….
—————————————-
সন্তানের প্লেটে খাবার কম দেখলে কেমন জানি করে, প্লেটে এতো খাবার কম কেন? এই বলে প্লেটটা ভর্তি করে দেয়। এতো খাওয়ার পরেও মায়ের চোখে সন্তান যেনো কত দিনের না খাওয়া।

“মা” কেয়ারলেস….
————————
নিজের কোমরের ব্যাথা, পিঠের ব্যাথায় ধুঁকে ধুঁকে মারা গেলেও কখনো ঔষধের কথা বলে না। অথচ আমাদের একটা কাশিতে তাঁর দিনটা যেনো ওলটপালট হয়ে যায়। ডাক্তার, হাকিম, বৈদ্য সব এক করে বসে।

“মা” আনস্মার্ট….
———————-
অন্যের স্মার্ট মা’য়ের মতো করে “মা” নামী-দামী শাড়ি পরিধান করে না, ভ্যানিটিব্যাগ ঝুলিয়ে এবং স্মার্টফোন হাতে নিয়েও ঘুরতে যায় না। সারাদিন খালি রান্নাঘর আর আমাদের ভালোমন্দের চিন্তায় পুরাতন থেকেই নিজের জীবনটা কাটিয়ে দেয়।

“মা” স্বার্থপর….
——————–
নিজের সন্তান ও স্বামীর জন্য “মা” দুনিয়ার সব কিছু ত্যাগ করতে পারে। পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ বোধহয় “মা” তাই বুঝি আমরা সন্তানেরা তাঁদের কষ্ট দিই। এতো কষ্ট বুকে নিয়ে- তবুও নিজেকে পরিবর্তন না করে “মা” আগের জায়গায়ই রয়ে যায়। কিন্তু একটু বড় হয়ে গেলেই আমরা সন্তানেরা তাদের বৃদ্ধাশ্রমে বা জীবন থেকে দূরে রাখি। যে বাবা-মা তিলে তিলে নিজেদের সবকিছু বিসর্জন দিয়েছেন আমাদের মানুষ করার জন্য, আজ সেই বাবা-মায়ের শেষ বয়সের ঠিকানা এখনকার বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে অথবা নিজ বাড়ীতে জীর্ণশীর্ণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। মানবতার প্রতি এ এক চরম উপহাস। এরপরও তারা বোকার মতো সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করে। সারাজীবনটা আমাদের খালি ভালোবাসা দিয়েই যায় বিণিময়ে দিনে একবার হলেও সন্তানের মুখে আদর করে “মা” ডাক শুনতে চান। তাঁরা কতো নির্বোধ তাই না?

আমি চাঁদ কে বলি-
তুমি সুন্দর নও….. আমার মায়ের মতো।

মা যে আমার সবার সেরা অনন্তকাল অবিরত। ওমা- মাগো তুমি ভালো থেকো ওপারে। মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমার ও সকলের মাকে খুব ভালো রাখেন- আমিন।
লেখকঃ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা,
-ইকবাল আহমেদ লিটন,সদস্য সচিব,আয়ারল্যান্ড আওয়ামী লীগ ও প্রধান উপদেষ্টা দৈনিক অভিযোগ বার্তা