মানিকগঞ্জের বর্ষীয়ান বামপন্থী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাহারুল ইসলাম আরজু মৃত্যু হয়েছে 

প্রকাশ: ১ বছর আগে

মো.নজরুল ইসলামঃ মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি (৩০-০১-২০২৩)

“যা হবার তাই হোক, ঘুচে যাক সর্বশোক, সর্ব মরিচীকা, বল শান্তি বলো শান্তি” আজ মানিকগঞ্জের গণমানুষের বর্ষীয়ান বামপন্থী কমিউনিস্ট নেতা আজীবন বিপ্লবী বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড আজাহারুল ইসলাম আরজু(৭০) মৃত্যুবরণ করেছেন।

তিনি দীর্ঘদিন কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে ডায়ালাইসিসসহ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবা দেশে ও বিদেশে গ্রহণ করেন এবং রোগের সাথে যুদ্ধ করে আজ ভোরে পরাজয় বরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর স্ত্রী, দুই কণ্যা ও এক পুত্রসহ পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও আদর্শের উত্তরসূরীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি ছাত্র জীবনে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান নিয়ে কৃতিত্বের সহিত এসএসসি, মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় ব্যাচের হয়ে অর্থনীতিতে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি ঢাবি থেকে এলএলবি এবং সমাজবিজ্ঞানে বুলগেরিয়া থেকে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবনের শুরুটা শিক্ষকতা দিয়ে। খাবাশপুর আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক ও অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি মানিকগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সদস্য হয়ে জজ কোর্টে মেহনতী মানুষের আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেছেন।

তার রয়েছে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই বামপন্থী প্রগতিশীল সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন মানিকগঞ্জ জেলা শাখা ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্যের দায়িত্ব পালন করেছেন।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি মানিকগঞ্জ জেলা শাখার দীর্ঘদিনের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের দায়িত্ব পালনসহ দেশ ও বিদেশে পরিভ্রমণ করেছেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির দীর্ঘদিন ধরে সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি রাশিয়া, বুলগেরিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের দেশে এবং ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে একাধিকবার রাজনৈতিক ও ব্যাক্তিগত কাজে অবিজ্ঞতা বিনিময় সফর করেছেন।

তিনি মানিকগঞ্জের গ্রামে শহরে কমিউনিস্ট পার্টির লাল পতাকা নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন। তাঁর চোখে মুখে সবসময়ই বিপ্লবী চিন্তা চেতনা কাজ করতেন। সার্বক্ষণিক রাজনীতির কারণে তাঁর জীবনের মহামূল্যবান সময় ব্যায় করেছেন মেহনতী মানুষের জন্য।

তিনি মানিকগঞ্জ- সাটুরিয়া থেকে ১৯৯১ সালে কাস্তে প্রতিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে সম্মানজনক ভোট পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। একাধিকবার মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

তিনি মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক শোষণ মুক্ত চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিকামী মানুষের জন্য আজীবন বাম ধারার নীতি আদর্শের রাজনীতির ডাক দিয়ে গেছেন। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে আমরা ভুলব না। আমরা তাঁর আদর্শের উত্তরসূরী হয়ে স্বপ্নের সমাজতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মানে পথ রচনা করবই।

কমরেড আরজু লাল সালাম।।