অন্যান্য

রাস্তার পাশের গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করলো কাউন্সিলর, বলির পাঠা ভ্যান চালক।

  প্রতিনিধি ১৩ মার্চ ২০২৩ , ৬:৪৫:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিউজ ডেক্সঃ

 

মানিকগঞ্জে পৌর কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাস্তার পাশে থাকা ১৪টি সরকারি গাছ বিক্রি করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত মো. সুরুজ মিয়াকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জরিমানা আদায়ের নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় কাউন্সিলর ও মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আরশেদ আলী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের ঢাকুয়াপাড়া এলাকায় পৌরসভার রাস্তার পাশের একটি জমির মালিক স্থানীয় সেলিম মিয়া। জমিটি দেখাশুনার দায়িত্বে আছেন তার আত্মীয় মো. সুরুজ মিয়া। পেশায় তিনি একজন ভ্যানচালক। সুরুজ মিয়া প্রায় দেড় যুগ আগে জমির পাশে সরকারি রাস্তার ঢালে বেশ কিছু গাছ রোপন করেন। গাছগুলো বড় হওয়ায় সেগুলো বিক্রি করার উদ্যোগ নেন তিনি। ব্যক্তিগত উদ্যোগে সরকারি জায়গায় গাছ রোপন করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত গাছ কাটার বিধান না থাকলেও তা অমান্য করে ১৪টি মেহগনি গাছ হিজুলি গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেনের কাছে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন তিনি। গাছগুলো ক্রয় করার পর টাকা পরিশোন না করেই তাড়ঘড়ি করে পরদিনই গাছগুলো কেটে নেন দেলোয়ার হোসেন। স্থানীয় সেঞ্চুরি ফাউন্ডেশন নামের একটি সমিতি গাছ রোপনের জন্য পৌরসভা থেকে সড়কটি ইজারা নিয়েছে জানিয়ে সমিতির সদস্যরা সড়কের আশপাশের গাছগুলোর মালিক দাবি করে পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আরশেদ আলী বিশ্বাসকে গাছ কাটার বিষয়টি অবগত করেন। এরপর কাউন্সিলর মো. আরশেদ আলী বিশ্বাস বিষয়টি সমঝোতার কথা বলে ভ্যানচালক সুরুজ মিয়াকে গাছ বিক্রির টাকা না দিয়ে উল্টো তার কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, কাউন্সিলর মো. আরশেদ আলী বিশ্বাস ওই গাছগুলো বিক্রয়ের টাকা এবং সুরুজ মিয়ার কাছ থেকে আদায়কৃত জরিমানার টাকা পৌরসভার ফান্ডে জমা না দিয়ে নিজেই সেগুলো আত্মসাৎ করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে সেঞ্চুরি ফাউন্ডেশনের কয়েকজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ওই রাস্তার পাশের গাছগুলোর মালিক সমিতি। সমিতির সদস্যদের না জানিয়ে এবং কোন রকম দরপত্র আহবান ছাড়াই গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে। শুনেছি এ বিষয়টি কাউন্সিলর আরশেদ আলী মীমাংসা করে দিয়েছে। আমরা তো কাউন্সিলরের উপরে কথা বলতে পারিনা।

গাছ ক্রয়ের কথা স্বীকার করে দেলোয়ার হোসেন বলেন, অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে আমি সুরুজের কাছ থেকে গাছগুলো কিনেছিলাম। পরে এটা নিয়ে ঝামেলা হলে কাউন্সিলর আরশেদ আলী আমাদের ডেকে বিষয়টি মিটিয়ে দিয়েছেন।

তবে সুরুজ মিয়া বলেন, আমি গরিব মানুষ, লেখাপড়া জানিনা। গাছগুলো আমি নিজে লাগিয়েছিলাম, কিন্ত আইন না জানার কারণে গাছগুলো বিক্রি করে দিয়েছিলাম। আমি গাছ বিক্রির টাকা পাইনি, উল্টো পৌরসভায় আবেদনের মাধ্যমে কাগজপত্র ঠিকঠাক করে বিষয়টি সমাধান করতে হবে বলে কাউন্সিলর আরশেদ আলী আমার কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নিয়েছে। আমার কাছে এত টাকা না থাকায় আমি একজনের কাছ থেকে ধার করে সেই টাকা দিয়েছি।

এ ব্যাপারে কাউন্সিলর মো. আরশেদ আলী বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে সুরুজকে অল্প কিছু টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ও যে অপরাধ করেছে ওর কিছুটা শাস্তি হওয়া দরকার। গাছ বিক্রির টাকা ও আদায়কৃত জরিমানার টাকা পৌরসভার ফান্ডে জমা দেওয়া হয়েছে কি’না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ঘটনার পর পৌরসভায় এখনো মিটিং হয়নি। পরবর্তী মিটিংয়ের পরই টাকাগুলো পৌরসভার ফান্ডে জমা দেওয়া হবে। এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. রমজান আলী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Design & Developed by BD IT HOST