শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জাজিরা পৌরসভার, পারিবারিক কলহের জের ধরে,মোঃ হানিফ শাহ (৩৫) পিতা মোঃ নয়ন শাহ আজ সকালে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।পরে ঘটনাস্থল হতে জাজিরা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।এটি নিয়ে থানায় এখনো মামালা হয় নি।
জাজিরা পৌরসভার ০৫ নং ওয়ার্ডের ফকির মাহমুদ আকন কান্দী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ নয়ন শাহ এর পাঁচ সন্তানের মধ্যে একমাত্র ছেলে হানিফ শাহ।পাচ ভাইবোনের মধ্যে হানিফ দ্বিতীয়,প্রায় ১৫ বছর যাবৎ হানিফ মিয়া বিদেশে থাকেন।মাঝ এসে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করেন,একি থানার মূলনা ইউনিয়নের,জয়সাগড় গ্রামের দেলোয়ার সরদারের মেয়ে মোসাম্মাদ সুমি আক্তার (২৬) কে।এর পর তাদের সন্তান হলে, আবার বিদেশে পাড়ি জমান।আসেন গত তিন মাস পূর্বে।জানা যায় আগামি মাসে চলে যাওয়ার কথা ছিলো তার। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ রবিবার (২২) জানুয়ারি,সকালে স্বামী,স্ত্রী উভয়ে ছেলেকে নিয়ে যায় মাদ্রাসায় সেখান থেকে সুমি যায় বাবার বাড়ি। মাদ্রাসা থেকে এসে সকাল ৮:৩০ এর দিকে ফকির মাহমুদ আকন কান্দি গ্রামে তার নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করে হানিফ। পরে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃত লাশ উদ্ধার করেন জাজিরা থানার এএসআই বিশ্বজিৎ।
সরজমিনে স্থানীয় তথ্য সুত্রে জানা যায়, হানিফ শাহ দীর্ঘদিন যাবৎ প্রবাসে থাকায় তার বোন যথাক্রমে শাহনাজ, জাহানারা,রেহানা, ও শারমিন দের সাথে তার স্ত্রী সুমি আক্তারের মধ্যে হানিফের বিদেশ থেকে বউয়ের একাউন্টে টাকা পাঠানো নিয়ে দন্দ চলে আসছিলো।এর মধ্যে সুমি তার স্বামি হানিফের পাঠানো টাকা দিয়ে একটি একতালা ঘর নির্মান করে।যা নিয়ে সুমির ননদেরা প্রতিনিয়ত তাকে জালাতন করতো,কূৎসা রটাতো।হানিফ বাড়ি আসায় সুমি তাকে তার নিজের কাছে রাখার চেস্টা করতো কিন্তু হানিফ তার বোনদের কাছে যেতো এ নিয়ে তাদের মাঝে দন্দের সৃষ্টি হয়।একমাস পূর্বে এ নিয়ে সুমি বাবের বাড়িতে চলে গেলে আবার বুঝিয়ে নিয়ে আসে হানিফ।এর পর তার বোনেরা সুমিকে মারধর করে।সেই সাথে হানিফের বাবা হানিফকে তার মেয়েদের না জানিয়ে হানিফকে বসতবাড়ি লিখে দেয়,যে কারনে বোনেরা ছিলো আরো ক্ষিপ্ত। মোট কথায় পারিবারিক সর্বোচ্চ কলহ বিরাজ করছিলো বাড়িটিতে, যে কারনে ভিতরে ভিতরে ঘুমরে মরছিলো হানিফ।
নিহত হানিফ শাহ’র স্ত্রী সুমি আক্তার বলেন, তার স্বামী দীর্ঘদিন সৌদি প্রবাসী ছিলেন।গত তিন মাস যাবত দেশে আসছেন। প্রবাস থাকাকালীন সময়ে আমাকে আমার শাশুড়ি ও ননদেরা মারধর করত।
দেশে আসার পর থেকেই তারা বিভিন্ন ভাবে আমাকে হুমকি দিত যে আমাকে তারা বিধবা বানাবে বা আমি তার ভাইয়ের সংসার করতে পারব না। আজ সকালে আমি আমার স্বামীকে বাড়িতে রেখে আমার বাবার বাসায় আসি।এরপর ফোনের মাধ্যমে খবর পাই, রুমের ভেতর ফ্যানের সাঙ্গে রশি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন, আমি ঐ বাড়িতে গেলে তার বোনেরা আমাকে বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি,দেখতে দেয়নি আমার স্বামীর লাশ।আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। প্রশাসনের যেন সঠিকভাবে তদন্ত করে আসামীদের শাস্তি প্রদান করেন।
অন্যদিকে নিহত হানিফ শাহ’র মা ও বোনেরা বলেন, আমার ছেলের বউ আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। বিদেশ থাকাকালীন সময়ে এবং দেশে আসার পরেও আমার ছেলের বউ আমার ছেলেকে নানা ভাবে অত্যাচার করত,তার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান,সংবাদ পেয়ে সাথে সাথে ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠাই মৃত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। যদি কেউ অভিযোগ করেন,তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীকালে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।