ঢাকাSaturday , 8 April 2023
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শীতলকুচি, ৭-ই এপ্রিল

News Editor
April 8, 2023 10:12 pm
Link Copied!

 

কলকাতা থেকে দেবাশীষ রায়ঃ

জায়গাটি তিস্তা নদীর এক পাড়ে অবস্থিত, ওই পাড়ে পঞ্চগড় । এখানেই এক সময় থাকত দুটি পরিবারের দুই ছেলেমেয়ে বিভূতি ও ইতি । পরে বিভূতির পরিবার বিভক্ত হয়ে যায়, এক জায়গায় তার মা ও বোনের সাথে বিভূতি চলে যায় মাথাভাঙ্গায় থাকতে । তার বাবা বীরেন রায় স্কুল মাস্টার ছিলেন । ওদিকে ইতির বাবা বিমল বর্মণও স্কুল শিক্ষক ছিলেন । এলাকায় অত্যন্ত সজ্জন ও পরোপকারী হিসেবে তার পরিচয় আছে । লেখাপড়ায় মোটামুটি ভালো ছিল বিভূতি । কিন্তু কবে যে তলায় তালায় তার প্রেম পর্ব শুরু হয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষক বিমল বর্মণের শীতলকুচি কলেজের পড়ুয়া ছোট মেয়ে ইতির সাথে সেকথা অনেকেরই অজানা । যদিও বিভূতি দাবী করছে গত চার বছর ধরে তারা সম্পর্কে ছিল । বর্তমানে নাকি ইতি তাকে ধোঁকা দিয়ে অন্য কারো সঙ্গে প্রেমে লিপ্ত হয়েছে । এবং যেহেতু তার মা বাপ উভয়েই রাজনীতির বিভিন্ন পদে আছেন, তাই তারা বিভূতিকে মার খাওয়ানোর হুমকি দিয়েছিল । সে যাই হোক, এই হত্যাকাণ্ডের কিছু আগে সে ইতিদের বাড়ির খুব কাছে একটি মেস বাড়ির ছেলেদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে সেখানে থাকতে শুরু করে এবং এভাবেই হত্যাকাণ্ডের ছক পাকা হয় ।
ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ইতির বাবা বিমল বাবু শৌচ কর্মের জন্য ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন । সারা রাত ঘাপটি মেরে থাকা বিভূতি তৎক্ষণাৎ ধারালো একটি বড় চাকু নিয়ে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে । স্বামীর চীৎকার শুনে ভিতর থেকে নীলিমা দেবী বেরিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে সাঙ্ঘাতিক ভাবে জখম করে আততায়ী । পিছনে পিছনে চীৎকার করতে করতে বেরিয়ে আসা বড় মেয়ে রুণাকে ও ইতিকেও কুপিয়ে জখম করে বিভূতি নামক সেই ঘাতক । বিমল বাবু ও তার স্ত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান ও বড় মেয়ে রুণা পরে কোচবিহারের হাসপাতালে মারা যায় । ইতি এখনো সেই হাসপাতালেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে । এদিকে প্রতিবেশীরা হৈ হল্লা শুনে আততায়ীকে কাবু করে ফেলেন ও তাকে গণধোলাই দেওয়া হয় । কিছু পরে শীতলকুচি থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে চলে আসে ও অভিযুক্তকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় ।
এইবার সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, অতীতে এমন কান্ড কদাচ ঘটত । কিন্তু কেন বর্তমানে এসব ঘটে চলেছে অহরহ ? অধিকাংশের মত এই যে, এটি একটি সামাজিক অবক্ষয় যা ঘটছে অভিভাবক দের তাদের সন্তান দের প্রতি অত্যন্ত নরম মনোভাবের কারণে । হাতে হাত গলিয়ে যখন ছেলে মেয়েরা দৃষ্টিকটু ভাবে পথে ঘাটে ঘুরে বেড়ায়, অথবা তার থেকেও অশ্লীল আচরণ সর্বসমক্ষে করে, তখন তাদের মা বাপ তো থাকে নিজের নিজের মতলব নিয়ে ব্যস্ত । বয়োজ্যেষ্ঠরা এদের কিছু বলতে ভয় পান অসম্মানিত হবার ভয়ে । তাই পূর্ববর্তী প্রজন্ম যদি দলবদ্ধ হয়ে এদেরকে শাসন করে পথে ফিরিয়ে আনবার চেষ্টা না করেন, যদি সমাজ কে এরা ভয় ও সম্মান করতে না শেখে, তবে কিছুতেই এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো যাবে না ।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।