শেখ কামালের ৭৪ তম জন্মদিন পালন করলো জাজিরা

News Editor
প্রকাশ: ১ বছর আগে

সানজিদ মাহমুদ সুজন, নিজস্ব প্রতিবেদক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহিদ শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী আজ।নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করেন শরীয়তপুর জেলা ও উপজেলা আওয়ামিলীগ এবং সহযোগী সংগঠন। এরি ধারাবাহিকতায় জাজিরা উপজেলা আওয়ামিলীগ কতৃক, উপজেলা আওয়ামী অস্থায়ী অফিসে শরীয়তপুর ১ এর এমপি ইকবাল হোসেন অপু এর সভাপতিত্বে, উপজেলা চেয়ারম্যান মোবারক আলী শিকদারের সঞ্চালনায়,এডভোকেট মির্যা হযরত আলী এর উপস্থাপনায় কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি জিএম নুরুল হক ও সাধারন সম্পাদক আবুতালেব চৌকিদার সহ আওয়ামী নেতৃবৃন্দ। পৌর মেয়র ইদ্রিস মাদবর ও প্রাক্তন ও সদ্য বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান , দেলোয়ার শিকদার,আবদুস সামাদ খান,মিথুন ঢালি,মোহাব্বত খান

ছাত্রলীগ সভাপতি রুবেল ব্যাপারি সহ আরো অনেক নেতৃবৃন্দ।

১৯৪৯ সালের এই দিনে তদানীন্তন গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী শেখ কামাল।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি জাতির পিতার হত্যাকারী মানবতার ঘৃণ্য শত্রুদের নির্মম-নিষ্ঠুর বর্বরোচিত হামলার শিকার হয়ে শাহাদতবরণ করেন।

শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী ছিলেন। তিনি ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার পূর্বমুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর এডিসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন।

শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ অনার্স শেষ করেন।

তিনি বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করেন। মানুষকে সমাজচেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে থিয়েটার আন্দোলনে তিনি প্রথম সারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী’।

তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয় শিল্পী হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

শেখ কামাল দেশে নান্দনিক ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার মানোন্নয়নে শ্রম দিয়েছেন। তিনি নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন। তাদের সঙ্গে নিয়মিত অনুশীলন করতেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ খ্যাতিপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদতবরণের সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এমএ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।