সুরমার ভাঙনে নিঃস্ব বীরমুক্তিযোদ্ধা উস্তার আলী

প্রকাশ: ১ বছর আগে

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সাড়ে তিন একর জমি ছিল কিন্তু সব জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন ভিটেবাড়িও নদীতে চলে যাচ্ছে। অন্য কোথাও জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ ঘরেই আছি।’ অশ্রুসিক্ত চোখে কথাগুলো বলছিলেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে উপজেলার বীরমুক্তিযোদ্ধা উস্তার আলী (৭৩)। উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা। উপজেলার সুরমা নদীর বুকে অর্ধেক ঝুলে থাকা ঘরে ১৫ সদস্য নিয়ে বসবাস করছেন। গত কয়েক বছরে সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙনের ফলে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করলে ইতোমধ্যে বসতবাড়ির উঠোন চলে যায় নদী গর্ভে। ঝুলন্ত ঘর ভেঙ যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সোমবার বিকেলে সরজমিন গেলে বীরমুক্তিযোদ্ধা উস্তার আলী হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ২০১৬ সাল থেকে ভাঙছে। ভাঙনরোধে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি কতো দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি কোনো প্রতিকার পাইনি। সোমবার দুপুরে ভঙনের শব্দে ঘুম থেকে জেগে দেখি বারান্দার মাটি নদীতে চলে গেছে। নতুন ফাটল দেখা দিয়েছে বসতমাটিতে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে নদী ভাঙনের সংবাদ প্রকাশিত হলে জালালপুর জামে মসজিদ রক্ষায় পাউবো বালি ফেলার উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু আমার বসতভিটা নদী গর্ভে চলে গেলেও কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্টদের। আমার পরিবার পরিজনকে আগেই অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছি। আমি নার পৈতৃক ভিটা ছাড়বো না। এখানেই মরতে চাই। একইভাবে তীব্র ভাঙনের কবলে রয়েছে জালালপুর গ্রামের রাজু মিয়া রাসুর অটো রাইস মিলটিও এখন নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। পাউবো সুনামগঞ্জের এসডিও সমশের আলী মন্টু বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে আমরা জালালপুর জামে মসজিদ ভাঙন প্রতিরোধে বালিভরতি জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বীরমুক্তিযোদ্ধার বসতভিটায়ও জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।