আন্তর্জাতিক

হিমাচল প্রদেশের প্রবেশদ্বার যোশীমঠের বিপদজনক স্থিতি।

  প্রতিনিধি ২০ জানুয়ারি ২০২৩ , ২:২০:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

ভারতে যতগুলি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত স্থান আছে তার অধিকাংশই অবস্থিত হিমালয়ের এই উত্তর পূর্ব প্রান্তে। অতি সুন্দর কাশ্মীর ও তার ব্যতিক্রম নয়।তবে হিমাচল প্রদেশের সিমলা হয়ত তার একটু ব্যতিক্রম।সিমলা একরকম ভাবে কয়েকটি বিশেষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি,কুলু,মানালি,লাহুল, স্ফিতি এমন কি ভয়াল সৌন্দর্যে অভিভূত করা লাদাখের রাজধানী লেতে যাবার একটি রাস্তাও বেরিয়েছে সেখান দিয়েই।ওদিকে তুষার তীর্থ কেদারনাথ ও বদ্রীনাথের প্রবেশপথ যেটি তার নাম যোশীমঠ। বিখ্যাত শিকারী জিম করবেটের লেখাতেও বার বার উঠে এসেছে যোশীমঠ, রুদ্রপ্রয়াগ,হলদোয়ানী, নৈনিতাল ইত্যাদি জায়গার কথা। জানুয়ারী মাসের প্রথম দিকেই যোশীমঠের কয়েকটি বাড়িতে ফাটল লক্ষ্য করা যায় । সাধারণ একতলা, দুতলা বাড়ির তুলনায় বরং বড় বড় কারুকার্য খচিত বাড়ি ও হোটেল গুলোতে এর প্রভাব অনেক বেশী ছিল । কিন্তু এত জিনিসপত্র ও লাভজনক ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাবার ভয়ে অনেকেই সেই খবরটা গোপন করে যায়।কিন্তু ক্রমশ অনেক বেশী সংখ্যক বাড়িতে যখন ফাটল বাড়তে থাকে,সরকার হুকুম জারী করে,বাড়ি খালি করে সরকারের দ্বারা নির্দিষ্ট আশ্রয়স্থলে চলে যাবার জন্য। এজন্য সরকার থেকে প্রতি বাড়ির মালিক কে দেড় লক্ষ টাকা অনুদান দেবার ও ঘোষণা করা হয়।কিন্তু বড় হোটেল গুলি সে আদেশ মানতে রাজী ছিল না।পরবর্তী কালে প্রাণহানির আশঙ্কায় পুলিশ ও আধা সেনাকে সামনে রেখে বুল ডোজার দিয়ে সেই বহুতল বিল্ডিং গুলি ভাঙ্গা শুরু হয়। বর্তমানে এই শহর ভুমিকম্পে বিধ্বস্ত নগরীর রূপ নিয়েছে । ভবিষ্যতে আবারও কোনোদিন পূর্বের রুপে এই নাগরিক দের জীবন স্বাভাবিক হবে কিনা কেউ সেকথা বলতে পারছেন না। কিন্তু কেন হল এই বিপর্যয় ? ভুতাত্বিক ও বিজ্ঞানী রা বলছেন পাহাড় কে মানুষ তার নিজের ব্যবসা ও লাভজনক যাতায়াতের প্রয়োজনে অনবরতই বিশৃঙ্খল করেছে । পাহাড়ের অনেক উপর থেকে নীচ অবধি যাতায়াতের ও পণ্য পরিবহণের জন্য দুই লেনের রাস্তা তৈরী হয়েছে,বর্ষা অথবা শীতে সেই সব রাস্তা ভেঙ্গে গেলে তাকে আবার পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার জন্য অনবরতই ডিনামাইট দিয়ে ফাটিয়ে, বুলডোজার দিয়ে মাটি, পাথর সরিয়ে ও মাটিকে ধরে রাখা গাছ গুলোকে কেটে দিয়ে,সেখানে লোহা ও সিমেন্টের বড় বড় চাঙ্গাড় দিয়ে পুনর্নির্মাণ করে প্রতিনিয়তই পাহাড়ের উপর অত্যাচার হয়ে চলেছে উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণের নামে । শুধু পথই নয়,পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা খরস্রোতা নদীগুলোর জল কে ব্যবহার করে তৈরী হয়েছে বড় বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। নদীর গতিপথ পাল্টানোর জন্য সেখানেও কৃত্রিম নালা ও বিশাল সব যন্ত্র কে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে পাহাড়ের মাথার উপর। প্রকৃতি এসব অবাঞ্ছিত উপদ্রব সহ্য করতে অরাজী,সেটা কয়েক বার ভুমিকম্পের দ্বারা জানান দিলেও জনসাধারণ বা সরকার কেউই গা করে নি । এখন এই সমূহ বিপদ সবাইকে এক আশ্রয় শিবিরে নিয়ে এসে ফেলেছে।পরিত্রাণের উপায় সবাইকেই ভাবতে হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Design & Developed by BD IT HOST