নিউজ ডেস্ক,
চট্টগ্রাম নগরীর নতুন ব্রিজ চত্বরে মূল সড়ক থেকে রাজাখালী এলাকা পর্যন্ত যানজটে অতিষ্ঠ যাত্রী। এতে অফিসগামী মানুষ থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন। এই পথে ২/৩ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিতে সময় লাগে প্রায় এক ঘণ্টা। ফলে নষ্ট হয় কর্মঘণ্টা।
এছাড়া অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিতেও বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই সড়কের অধিকাংশ দখল করে রাখে গণপরিবহন। যাত্রী তুলতে এসব গণপরিবহনের রেষারেষির কারণেই সকাল-বিকাল লেগে থাকে যানজট।
১০০ গজ দূরত্বে ট্রাফিক পুলিশ বক্স থাকলে তবুও দেখা যায় না যানজট নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া এই এলাকায় নেই ফুটওভার ব্রিজ। ফলে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হয় লাখ লাখ সাধারণ মানুষ। তবে স্থানীয়রা জানান, রাস্তার মাঝখানে পাকিং করার কারণে মূল সড়কের সামনে যানজট হয় প্রতিদিন।
একইসঙ্গে এইখানে ফুটওভার ব্রিজেরও দরকার। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পথচারীরা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন। নতুন ব্রিজ এলাকায় দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলে। অন্যদিকে সড়ক দখল করে অধিক যাত্রী পাওয়ার আশায় কারণে-অকারণে সাতকানিয়া লোহাগাড়া কক্সবাজার গামী ঈগল, নাবিলা, এলাইন, লোহাগাড়া, হানিফ, এসআলম সহ লোকাল বাস গাড়িগুলোর মধ্যে চলছে প্রতিযোগিতা।
পুরো সড়ক দখল করে বাস চালকেরা ‘কার চেয়ে কে বেশি যাত্রি নেবে’ সেই প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। এছাড়া একই সিরিয়ালের গাড়ি যেন অপরটিকে ওভারটেক করে যাত্রী নিতে না পারে সেজন্য সড়কে আড়াআড়িভাবে রাখা হয় গাড়ি। আরও দেখা গেছে, ফুটপাতও হকারদের দখলে। হকারদের পণ্যের পসরা, সড়কের ওপর বাজারের কারণে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে সমস্যায় পরতে হচ্ছে পথচারীদের।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লোকাল বাসে যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতা, সরাসরি রাস্তা পারাপার এবং সড়কে যানজট নিরসনে নেই কোন উদ্যেগ। এজন্য এখানে যানজট লেগেই থাকে। আর পথচারী পারাপারের জন্য নেই কোনো ফুটওভার ব্রিজ।
একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন মো. কামাল, তিনি বলেন তাড়াহুড়ো করে একসঙ্গে অনেক মানুষ রাস্তা পার হতে গিয়ে ভয় লাগে, দুর্ঘটনা ঘটে অনেকের প্রাণ হানি হয়েছে অনেকের। কখন গাড়ির নিচে চাপা পড়ি। গাড়ি থামলে কিংবা আস্তে চলা অবস্থায় আমরা গাড়ির ফাঁক-ফোড়ক দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছি। অন্য জায়গার মত এখানেও একটা ফুটওভার ব্রিজ দরকার।
সেলি বেগম নামের স্থানীয় এক মহিলা বলেন, এখানে কোনও ফুটওভার ব্রিজ নেই। সড়কের বড় অংশজুড়ে লোকাল ও দূরপাল্লার গাড়িগুলো ইচ্ছামতো পার্কিং করে থাকে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক পুলিশের এগিয়ে আসে কিন্ত একটু পর আবার একি অবস্থা। এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, জানতে চাইলে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী নুরুল হক বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না,আমি দলীয় মিটিং এ আছি পরে কথা বলবো বলে ফোন কেটে দেন।
যানজট সহ অবৈধ পাকিং এর বিষয়ে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ দক্ষিণ (ডিসি) এন এম নাসিরুদ্দিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজকে বলেন, ‘যানজট নিরসনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, যা চলমান রয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং জনদুর্ভোগ লাঘবে পরিবহন সেক্টরে যারা আছেন তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
অবৈধ পাকিং ও গ্রাম সিএনজি সহ গাড়ি গুলার বিরুন্ধে মামলা জরিমানা করা হয় প্রতিনিয়ত। আমরা তাদেরকে প্রতিনিয়ত ধরছি মামলা দিতেছি। রাস্তায় অবৈধ পাকিং ও রাস্তার মাঝখানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী নেওয়ার বিষয়ে তাদেরকে ডেকে সচেতন করছি।
আমরা আমাদের ট্রাফিক বিভাগে যারা দায়িত্ব পালন করছি আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে রাস্তায় যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়। এবং এইসব বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।