আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
আরাকান আর্মি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার খবরে নাফ নদীর এপারে টহল জোরদার করেছে বিজিবি।
দীর্ঘ ১১ মাসের লড়াই-সংঘাতের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।
মংডু আরাকান আর্মির দখলে চলে যাওয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে দুই পারেই রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাঝুঁকি বেড়েছে। রাখাইন রাজ্যে পাঁচ লাখের মতো রোহিঙ্গা আছে এখনো। তাদের সঙ্গে আরাকান আর্মির বিরোধ আছে। রাখাইনের রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হতে পারে। এমন আশঙ্কা থেকে বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মংডু দখলে নেওয়ার পরপরই আরাকান আর্মি নাফ নদীতে নৌ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে যাত্রীবাহী ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে যাচ্ছেন কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছটার বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট দিয়ে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, পাঁচ দিন ধরে নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্ট মার্টিনে খাদ্যসামগ্রীর মজুত কমে গেছে। টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আমদানি পণ্যবোঝাই জাহাজ বা কার্গো ট্রলার বাংলাদেশে আসতে পারছে না।
মিয়ানমারের মংডুর সঙ্গে বাংলাদেশের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। নাফ নদীটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমানা ভাগ করে রেখেছে। রাখাইন রাজ্যের বিপরীতে বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত। নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সেন্ট মার্টিন থেকে টেকনাফ-উখিয়া হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি পর্যন্ত ২৭০ কিলোমিটারে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বাংলাদেশ।সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, আরাকান আর্মি মংডুর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে সেখানে গোলাগুলি বন্ধ আছে। মর্টার শেল, গ্রেনেড বিস্ফোরণও থেমে গেছে। তাতে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত মনে হলেও দুই পারের (টেকনাফ ও মংডু) সীমান্তজুড়ে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। এত দিন ওপারের বিকট শব্দের বিস্ফোরণে কেঁপেছিল টেকনাফ সীমান্তের ২৩টির বেশি গ্রাম। মাঝেমধ্যে টেকনাফ সীমান্তের লোকজনের ঘরবাড়িতে এসে পড়ত ওপারের গুলি।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে টেকনাফ, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত ঘুরে নাফ নদীর বাংলাদেশ জলসীমানায় বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল তৎপরতা চোখে পড়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখা হচ্ছে জানিয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদী ও সীমান্তে কঠোর অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের কাউকে শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করা হবে না।এছাড়াও সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।