লেখকঃএস এম ফিরোজ আহাম্মদ
পর্যটক হারাচ্ছে সিলেটের রাতারগুল
নিচে সবুজ জল, ওপরে নীল আকাশ। স্বচ্ছ পানির ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে করচসহ জালিবেত, কদম, হিজল, মূর্তাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টে এই নয়নাভিরাম দৃশ্যের দেখা মেলে। মিঠা পানির অপরূপ জলাবনটির ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়িয়ে মেঘালয়ের পাহাড় চমৎকার লাগে। তবে বেশি নৌকা ভাড়া ও ওয়াচ টাওয়ারে প্রবেশ বন্ধ থাকায় দিন দিন পর্যটক হারাচ্ছে রাতারগুল।
দিন দিন পর্যটক হারাচ্ছে রাতারগুল।
দেশের একমাত্র স্বীকৃত সোয়াম্প ফরেস্ট বা জলার বন রাতারগুল যা বাংলার অ্যামাজন নামে পরিচিত। সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে রাতারগুলের অবস্থান। বনের ৮০ শতাংশ এলাকাই গাছ দিয়ে ভরা। বিশাল এ বনে রয়েছে জলসহিষ্ণু প্রায় ২৫ প্রজাতির গাছ। জলে বুক ডুবিয়ে থাকা গাছের ডালপালায় সবুজ পত্র-পল্লব চমৎকার দৃশ্য উপভোগ করতে পর্যটকদের উপস্থিতি দেখা যায়। প্রকৃতির অপরুপ পরিবেশে ঘুরতে আসায় আনন্দিত অনেকেই।
আগত পর্যটকরা নয়ানাভিরাম দৃশ্য দেখে যেমন খুশি হোন তেমনি অনেক অব্যবস্থাপনার জন্য ক্ষোভও প্রকাশ করেন। নৌকা ভাড়া বেশি আদায়ের অভিযোগের পাশাপাশি সোয়াম্প ফরেস্টে দাঁড়িয়ে থাকা ওয়াচ টাওয়ারটি বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
নৌকার মাঝিরা বলছেন, ন্যায্য ভাড়াই নেয়া হচ্ছে। তবে প্রতিটি নৌকা থেকে বন বিভাগকে দিতে হয় আলাদা ফি। তাই ভাড়া একটু বেশি।
সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, বন বিভাগের আদায় করা টাকার অঙ্ক পুন:নির্ধারণের কথা ভাবছেন তারা ও অর্থের সংস্থান পেলে পুনঃনির্মাণ হবে ওয়াচটাওয়ারটি।
সারা বিশ্বের ১৮ টি সোয়াম্প ফরেস্টের মধ্যে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট একটি এখানে দেশ ও বিদেশ থেকে অনেট পর্যটকের আগমন ঘটে। পর্যটকদের আনন্দ দিতে মাঝিরাও কন্ঠ ছেড়ে ধরেন গান।
তারপরও বড়ই অদ্ভূত এই জলের রাজ্য উপভোগ করতে দিন দিন কমছে পর্যটকদের সংখ্যা। নৌকা ভাড়া কমলে এবং ওয়াচ টাওয়ারটি সংস্কার হলে বাড়বে পর্যটকের সংখ্যা।
এছাড়াও সিলেট থেকে যোগাযোগ ব্যাবস্হায় আরও উন্নত করতে হবে এবং পর্যটকদের জন্য বিশ্রামাগার টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।