
অভিযোগ বার্তা ডেস্ক:
সরকারি অফিস, বাংলাদেশ সচিবালয় কিংবা বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন – কোথাও এখন আর আপাতত দেখা যাচ্ছে না রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের ছবি। টেলিফোনে মৌখিক নির্দেশনার ভিত্তিতে নামিয়ে ফেলা হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রধানের প্রতিকৃতি। সর্বশেষ উদাহরণ – লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন, যেখানে ১৫ আগস্টের পর রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলা হয়।
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি যেখানে নেই, সেখানে কি রাষ্ট্রপতির ছবি থাকা উচিৎ? এমন যুক্তিই ব্যবহৃত হচ্ছে মৌখিক বার্তায়। তবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকরা এটিকে দেখছেন একটি গভীর বার্তার ইঙ্গিত হিসেবে—রাষ্ট্রপতির বিদায়ের ঘণ্টাধ্বনি কি তবে বেজে উঠেছে?
অবস্থার জটিলতা আরও বাড়িয়েছে রাষ্ট্রপতির বিদেশ সফর বাতিলের ঘটনা। নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সফর বাতিল করতে হয়। কারণ তার অনুপস্থিতিতে সংবিধান অনুযায়ী স্পিকারকে দায়িত্ব নিতে হয়। অথচ বর্তমান স্পিকার পদত্যাগ করে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন। ডেপুটি স্পিকার কারাগারে। এই পরিস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব কে নেবেন তা নিয়ে সৃষ্টি হয় সাংবিধানিক জটিলতা।
আইন অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতির মাধ্যমে এই দায়িত্ব হস্তান্তরের পথ থাকলেও তা দীর্ঘ ও জটিল একটি প্রক্রিয়া। ফলে রাষ্ট্রপতির বিদেশ যাত্রা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
ছবি নামানো কোনো লিখিত নির্দেশনায় হয়নি। সবকিছু হচ্ছে ফোনে, মৌখিকভাবে। এতে অনেকেই মনে করছেন, এটি কেবল প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়—বরং একটি রাজনৈতিক বার্তা। অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো বলছে, সরকার ও ক্ষমতাসীন মহলের একাংশ রাষ্ট্রপতির ভূমিকা নিয়ে খুশি নন। অভ্যুত্থানের ঘটনায় রাষ্ট্রপতির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই।
২০২৪ সালের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সময় থেকেই রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের অপসারণ চেয়ে সক্রিয় ছিলেন কিছু অংশ। বঙ্গভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচিও দিয়েছিলেন তারা। তবে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের অনমনীয় অবস্থানের কারণে সেই প্রয়াস সফল হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। এমন সময় রাষ্ট্রপতির পদ নিয়ে অস্থিরতা রাজনৈতিক অঙ্গনে অনিশ্চয়তা ও ঘোলা পানি তৈরি করতে পারে। যেকোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা, পরিবর্তন বা সিদ্ধান্ত আগামী দিনগুলোর চিত্র পাল্টে দিতে পারে।
সূত্র: মানবজমিন
মন্তব্য করুন
Design & Developed by BD IT HOST