বরগুনা জেলা প্রতিনিধি:- মোঃ সরোয়ার
বরগুনায় মুখার কারণে অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন জেলেও ট্রলার মালিকদের প্রায় সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করা জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা শুরু হতে বাকি মাত্র কয়েকদিন। এ অবস্থায় ঘূর্ণিঝড়ের পর অনুকূল আবহাওয়া থাকার পরও সাগরে মাছ শিকারে যাবেন না তারা।
মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় প্রায় ৫০ হাজার জেলে থাকলেও নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৩৭ হাজার। ঘুর্ণিঝড় মোখা’র প্রভাবে অনেকেই বন্দরে ট্রলার নোঙর করে আছে।
জানা যায়, ১৯ মে পর্যন্ত মাছ শিকারের প্রস্তুতি নিয়ে সমুদ্রে গিয়েছিল বরগুনার প্রায় দুই হাজার মাছ ধরার ট্রলার। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই তড়িঘড়ি করে তীরে ফিরতে হয়েছে জেলেদের। এতে কাঙ্খিত মাছ না পাওয়ায় লোকসানে পড়েছেন তারা। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নিষেধাজ্ঞা পিছিয়ে দেয়ার দাবি মৎস্যজীবী নেতৃবৃন্দের।
কইয়ুম নামের এক জেলে জানান, নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে সাগরে মাছ শিকারে যে ক’দিন সুযোগ পাবেন তাতে লাভতো হবেই না, উল্টো ভারী হবে লোকসানের বোঝা।
এবিএম বোটের মাঝি হুমায়ুন কবির জানান, তিন চার দিন পর ২০ মে থেকে শুরু হবে সমুদ্রে ৬৫ দিনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা। এ কারণে ঘূর্ণিঝড়ের পর অনুকূল আবহাওয়া থাকার পরও মাছ শিকারে পর্যাপ্ত সময় না থাকায় এখন আর সমুদ্রে যাবেন না তারা।
নূরজাহান ফিসিং বোর্টের মালিক আঃ আজিজ খান বলেন, আমার দুটি ট্রলার মাছ ধরার জন্য সাগরে ছিল। কিন্তু হঠাৎ দুর্যোগের কারণে কূলে ফিরে আসতে হয়েছে। এতে আমার কয়েক লক্ষাধিক টাকা লোকসানে পরতে হবে। এর ভিতরে আবার নিষেধাজ্ঞা কিভাবে সংসার চালাবো বুঝে উঠতে পারছি না। সরকারের কাছে নিষেধাজ্ঞা পিছিয়ে দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষতি সম্মুখীন হয়েছেন জেলে ও ট্রলার মালিকরা। নিষেধাজ্ঞা পিছিয়ে দেয়ার দাবি জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির। যাতে করে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পরে জেলে ও ট্রলার মালিকরা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দে বলেন, আমাদের জেলেরা যারা এখনও সাগরে রয়েছে তারাও হয়তো আজকের মধ্যে কুলে ফিরবে। তবে যারা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন্দরের নোঙর করা রয়েছে তাদের সাথে সাগরের মাছ ধরা নিয়ে দুই একদিনের ডিফারেন্স এতে করে তেমন একটা লোকসান পোহাতে হবে না বলে আমি মনে করি। বিশেষ করে আমাদের সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে নদীতে মাছ ধরতে পারবে। এই নিষেধাজ্ঞা চলে যাওয়ার পরে জেলেরা ভালো মাছ পেয়ে তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।
ইতিমধ্যে ২৭ হাজার জেলেদের জন্য চাল এসে পৌঁছেছে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রকার বরাদ্দ আসলে আমরা তা পৌঁছে দিবো।