এস এম আকাশ:
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেওয়া একটি গোপনীয় প্রতিবেদনে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীরের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, খাস্তগীর তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সাথে যুক্ত হয়ে এক্সপেট সার্ভিস নামের একটি থার্ড পার্টি কোম্পানিকে চুক্তি অনুযায়ী হাইকমিশনের কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে এই দুর্নীতি করেছেন।
ই-পাসপোর্ট এবং ভিসা সার্ভিসের অনুমোদন থাকলেও ডেপুটি হাইকমিশনারের যোগসাজশে পাসপোর্ট ও ভিসা উইংকে অকার্যকর করে মিশন থেকে পাসপোর্ট ও ভিসা উইংয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে আউট সোর্সিং প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন।
মূলত এক্সপার্ট সার্ভিস কোম্পানিটি সাবেক সরকারের একজন চীপ হুইপের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান। মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের ই-পাসপোর্ট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এক্সপার্ট সার্ভিসের নামে দেশ থেকে হাজারো কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মূখর মালয়েশিয়া।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগ দেয়ার পর থেকে তিনি হাইকমিশনের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথেও জড়িত রয়েছেন খাস্তগীর।
যোগদানের অল্প সময়ের মধ্যেই খাস্তগীর বেসরকারি কোম্পানি ‘ডটলিনা’এর সাথে যুক্ত হয়ে বাংলা টাইগার ডিজিটাল নামে একটি জব পোর্টাল চালু করার জন্য সহযোগিতা করেন। সে মালয়েশিয়া সরকারের কাছ থেকে যথাযথ অনুমোদন না নিয়েই পোর্টালটি চালু করা হয়েছিল, যার ফলে হাইকমিশন বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিল।
জবপোর্টালের মালিক মাহবুব মতিনকে সম্পৃক্ত করে প্রথম আলো-তে মানি লন্ডারিং রিপোর্ট প্রকাশের পর (জবপোর্টাল) Dotline টি বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে, প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে যে খাস্তগীরকে ই-পাসপোর্ট-সম্পর্কিত বিষয় বা হাইকমিশনের পাসপোর্ট ও ভিসা উইংকে অকার্যকরে পাসপোর্ট সেকশনের সকল কাজ এক্সপার্ট সার্ভিসকে পাইয়ে দেওয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা লেনদেন করেছে। এমতাবস্থায় এক্সপার্ট সার্ভিসের সঙ্গে সাবেক সরকারের চুক্তি বাতিল ও খাস্তগীর এবং তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তদন্তেরও দাবি করেছেন অভিজ্ঞ মহল।
মালয়েশিয়ায় ছাত্র আন্দোলনের সময় কনস্যুলার (এনএসআই কর্মকর্তা) মোর্শেদ আলমের সাথে যুক্ত হয়ে খাস্তগীর বিক্ষোভকারীদের পাসপোর্ট বাতিলের হুমকি দিয়েছিলেন। এ সময় তার বক্তব্যের ভিডিও মালয়েশিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়।
খাস্তগীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ হাইকমিশনের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, সাবেক সরকারের ঘনিষ্ঠ লোক হওয়ায় খাস্তগীরের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো আলোর মুখ দেখেনি কখনও।