বিশেষ প্রতিবেদনঃ
গরমকালে শরীর সুস্থ ও চাঙা রাখতে যে কটি ফল বিশেষভাবে উপকারী, তার মধ্যে কাঁঠাল অন্যতম। স্বাদে মিষ্টি ও পুষ্টিতে ভরপুর এই ফলটি শুধু রসনাতৃপ্তিই করে না, শরীরের নানা উপকারেও আসে। হজমে সহায়তা থেকে শুরু করে পানিশূন্যতা প্রতিরোধ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো, ওজন নিয়ন্ত্রণসহ নানা কারণেই কাঁঠাল দারুণ উপকারী।
কাঁঠাল প্রাকৃতিকভাবে শক্তি বৃদ্ধি করে-
কাঁঠালে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি, যেমন সুক্রোজ ও ফ্রুকটোজ। এই প্রাকৃতিক চিনি শরীরে তাৎক্ষণিক ভাবে শক্তি জোগায়। এতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেটও থাকে, তাই এটি একটি দারুণ প্রাকৃতিক শক্তির উৎস, যা গ্রীষ্মকালে সক্রিয় থাকতে সহায়তা করে।
কাঁঠাল হজমশক্তি উন্নত করে-
অনেকে মনে করেন কাঁঠাল খেলে হজমে সমস্যা হয়, কিন্তু কাঁঠালে প্রচুর ডায়েটারি আঁশ থাকে, যা হজমপ্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এটি মল সহজে বের হতে সাহায্য করে, ফলে পেট পরিষ্কার থাকে। পাশাপাশি কাঁঠাল কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। এটি হজম নালি পরিষ্কার রাখে ও অন্ত্রের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখে।
পাকা কাঁঠালে প্রচুর ডায়েটারি আঁশ থাকে, যা হজমপ্রক্রিয়া ঠিক রাখতে সাহায্য করে,ভিডিও : অভিযোগ বার্তা
কাঁঠাল পানিশূন্যতা বা মাথাব্যথা প্রতিরোধ করে-
কাঁঠালের পাকা কোষে জলীয় উপাদান থাকে প্রায় ৮৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ, যা কাঁঠালের বিচির (প্রায় ৬০.০৭৫ শতাংশ) তুলনায় অনেক বেশি। গরমে ঘামে শরীর থেকে যে পানি বেরিয়ে যায়, তা পূরণে কাঁঠাল ভালো কাজ করে। কাঁঠালে ইলেকট্রোলাইটও থাকে, যা শরীরের পানির ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং পানিশূন্যতার কারণে ক্লান্তি বা মাথাব্যথা প্রতিরোধে সহায়ক।
পাকা কাঁঠাল রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে-
কাঁঠালে থাকে প্রচুর ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে বিশেষভাবে কার্যকর। গরমকালে অনেক সময় ঠান্ডা, সর্দিকাশি বা ভাইরাল জ্বরের ঝুঁকি থাকে, আর এসবের বিরুদ্ধে শরীরকে লড়তে সাহায্য করে কাঁঠাল।
কাঁঠালে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের অক্সিডেটিভ চাপ কমায়,ছবি:অভিযোগ বার্তা
পাকা কাঁঠাল ত্বকের জন্য উপকারী-
কাঁঠালে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের অক্সিডেটিভ চাপ কমায়, যা ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করে।র পাশাপাশি, কাঁঠালের উচ্চ জলীয় উপাদান গ্রীষ্মের রুক্ষতা, ব্রণ ও ত্বকের নির্জীব ভাব দূর করতে সহায়তা করে। নিয়মিত কাঁঠাল খাওয়ায় ত্বক হয়ে ওঠে সতেজ, নরম ও দীপ্ত।
পাকা কাঁঠাল ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক-
মিষ্টি স্বাদের হলেও কাঁঠালে ক্যালরি ও চর্বি খুবই কম থাকে। এতে থাকা আঁশ পেট ভরাট রাখে, ফলে ঘন ঘন খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায় এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এড়াতে সহায়তা করে। এসব কারণে কাঁঠাল ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক একটি স্বাস্থ্যকর ফল।
পাকা কাঁঠালের পুষ্টিগুণ-
১০০ গ্রাম পাকা কাঁঠালে আছে ৭৭.০ গ্রাম জলীয় অংশ, ১.২ গ্রাম প্রোটিন, ০.২ গ্রাম ফ্যাট, ১৩.৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১.১ গ্রাম ফাইবার, ১৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪১ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ২৬৮ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ০.৩ মিলিগ্রাম আয়রন, ২ আইইউ ভিটামিন-এ, ৩.৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি, ২০.৬ গ্রাম চিনি, ম্যাগনেসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম আর ৭২ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি পাই।
মন্তব্য করুন
Design & Developed by BD IT HOST