মোহাম্মদ আলী,হরিরামপুর,(মানিকগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হাজারী গুড়। গোটা দেশে এক নামেই পরিচিত এই খেজুরের গুড়। ইতিহাসখ্যাত হাজারী গুড়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দু’হাতে গুঁড়ো করে ফুঁ দিলে তা ছাতুর মতো বাতাসে উড়ে যায়। এ ঐতিহ্য দু-এক দিনের নয় প্রায় দুই শত বছরের।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা শিকদার পারা গ্রামে হাজারী নামে একজন দক্ষ গাছি ছিলেন। দক্ষতা, সাধনা আর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আবিষ্কার করেন সুস্বাদু এই গুড়। তার নাম অনুসারেই এ গুড়ের নাম রাখা হয় হাজারী গুড়। হাজারী পরিবারের সদস্যরা এখনো এ সুনাম ধরে রেখেছেন।
কিন্তু বর্তমানে হাজারী গুড়ের নামে চলছে অভিনব প্রতারণা কিছু অসাধু গাছি এবং ব্যবসায়িরা তাদের নামের সিল বাদ দিয়ে ভেজাল দিয়ে হাজারীর নকল সিল মেরে বাজারে বিক্রি করছে। যা প্রকৃত হাজারী গুড়ের সুনাম নষ্ট করছে।
হাজারী পরিবারের সদস্য সোহরাব হাজারী বলেন, হাজারী গুড়ের সুনাম দেশব্যাপী এই সুনাম নষ্ট করার জন্য কিছু অসাধু গাছি এবং ব্যাবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় আমাদের সুনাম নষ্ট করছে। বাজারে নকল হাজারী বানিয়ে যারা বিক্রয় করতো তাদের থেকে নকল ছিল নিয়ে এসেছি এবং তারপরও যারা নকল হাজারী বানায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাজারী পরিবারের সদস্যরা সাংবাদিকের জানায় , কিছু অসাধু ব্যবসায়িরা তাদের নামের সিল বাদ দিয়ে ভেজাল দিয়ে হাজারী সিল মেরে বাজারে বিক্রি করছে। সবাই হাজারী গুড় বানাতে পারে না। নামের গুড় বাজারে সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি কিন্তু ঐ গুড়ই হাজারী সিল দিতে পারলেই ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করা যায়। তাই আমরা চায় ক্রেতারা যাচাই বাছাই করে তবেই প্রকৃত হাজারী গুড় ক্রয় করুক।
হাজারী পরিবারের আরেক সদস্য শফিকুল ইসলাম হাজারী শামীম বলেন, গোপনে কিছু গাছি ও ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার উদ্দেশ্যে হাজারী গুড়ের নাম ব্যবহার করে ভেজাল গুড় তৈরী করে বিক্রয় করছে যা আমাদের সুনাম নষ্ট করছে। তাই আমরা নিজস্ব ব্র্যান্ডিং এবং ট্রেডমার্ক করে মোট ১৯ জন গাছিকে এই হাজারী গুড় বানানোর ছিল ও অনুমতি দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, গত বছরে অামারা যেসকল নকল হাজারী গুড়ের সিল পেয়েছি তা উঠিয়ে নিয়েছি। তারপরেও যারা এই অপকর্ম করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ব্যপারে জেলা মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। হাজারী গুড়ের সুনাম যেন নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন তৎপর থাকবেন।