প্রতিনিধি ২৬ মে ২০২৩ , ২:৪৭:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ
বরগুনা জেলা প্রতিনিধি মোঃ- সরোয়ার
বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলায বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের জাল সনদধারী অধ্যক্ষ ফোরকান মিয়ার অপসারণ ও বেতন ভাতার দাবীতে শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্রীদের মানববন্ধনে করেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বেলা পৌনে ১১টার দিকে এই মানববন্ধনে অধ্যক্ষ ফোরকান মিয়ার সন্ত্রাসী বাহিনী মানববন্ধনে হামলা চালিয়ে শিক্ষক সহ চার জনকে আহত করেন। হামলায় আহতরা হলেন, কৃষি বিজ্ঞান বিষয়ের জেষ্ঠ্য প্রভাষক জয়নুল আবেদীনসহ চার শিক্ষক আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত জয়নুল আবেদীনকে শিক্ষকরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িত বহিরাগত সন্ত্রাসী মেহেদীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় থানায় মেহেদীকে প্রধান আসামী করে ছয় জনের নামে মামলা হয়েছে। কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ফোরকান মিয়া ১৯৯৯ সালে বিএ (পাস) জাল সনদ দিয়ে আমতলী বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজে ইসলামী শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক পদে চাকুরি নেন। ২০১০ সালে তিনি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ওই কলেজের অধ্যক্ষ হন। অধ্যক্ষ হওয়ার তিন বছরের মাথায় ২০১৩ সালে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, নারী কেলেংকারীর অভিযোগে কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। সাময়িক বরখাস্তের পর তাঁর ডিগ্রি পাসের জাল সনদের তথ্য বেরিয়ে আসে। পরে তিনি স্বেচ্ছায় কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ করেন। আরও জানা যায়,গত ৮ বছর ফোরকান কলেজে দায়িত্ব থেকে দুরে ছিলেন। ২০২১ সালের ১২ জুলাই মোঃ ফোরকান মিয়া রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ পদে আসিন হন। ওই বছর ২৬ নভেম্বর কলেজ পরিচালনা কমিটি তাকে পুনরায় বরখাস্ত করেন। কিন্তু তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জবর দখল করে কলেজের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ফোরকানের এমন কর্মকান্ডে গত বছর নভেম্বর থেকে এ বছর মে মাস পর্যন্ত ৭ মাস কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে। পুলিশ আটককৃত সন্ত্রাসী মেহেদীকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, ফোরকানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী মেহেদী, নৈশ প্রহরী বাবুল মিয়া, আমতলী পৌর জামায়াতের আমির প্রভাষক কবির হোসেন, সাবেক উপজেলা ছাত্র শিবির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক বাছির উদ্দিন, জামায়াত নেতা রসায়ন বিদ্যার প্রভাষক জলিল মিয়া, মাকসুদুর রহমান, নজরুল ইসলাম ও রুহুল আমিন মানববন্ধনে হামলা করেছে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হয়। আহত প্রভাষক জয়নুল আবেদীন বলেন, ফোরকান, জলিল, নজরুল, বহিরাগত সন্ত্রাসী মেহেদী ও বাবুল আমার উপরে হামলা করেছে। আমি এ ঘটনায় শাস্তি দাবী করছি। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌসি আক্তার বলেন, জাল সনদধারী বহিস্কৃত অধ্যক্ষ ফোরকান জবর দখল করে কজেলের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তার কারনে গত সাত মাস ধরে শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন না। ফোরকানের অপসারণ ও বেতনভাতার দাবীতে শিক্ষকরা মানববন্ধন করে। সেখনে আমাদের শিক্ষকদের উপর হামলা চালায় অধ্যক্ষ ফোরকানের সন্ত্রাসী বাহিনী হামলায় ৪ জন শিক্ষক আহত হয়েছেন। আমরা এর বিচার চাই। এ বিষয়ে বহিস্কৃত অধ্যক্ষ ফোরকান মিয়া বলেন, আমি মারধর করিনি। উল্টো আমাকে লাঞ্ছিত করেছে। আমতলীর (ওসি )একেএম মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত মেহেদীকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
Design & Developed by BD IT HOST