দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:: দোয়ারাবাজার সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের শিক্ষক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ মারুফ কর্তৃক এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে অনৈতিক আচরণে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। সোমবার ক্লাস বর্জন করে বিচারের দাবিতে, সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানায়, জীববিজ্ঞানের শিক্ষক আগে থেকেই তাঁর আচরণ অসন্তোষজনক। কিন্তু এতদিন কেউ বলেনি। অবিলম্বে ওই শিক্ষককে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা না হলে প্রয়োজনে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফ মুর্শেদ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আহমদ ও দোয়ারাবাজার থানার উপপুলিশ পরির্দশক মিজানুর রহমান শিক্ষার্থীদের বিচারের আশ্বাস দিয়ে তাদেরকে বিক্ষোভ বন্ধ করে ক্লাসে ফেরার আহবান জানান। পরে এ আশ্বাসে ওপর ভিত্তি করে বিক্ষোভ স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরে যায়।
অপর দিকে শিক্ষকের বহিষ্কার ও বিচারের দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে সরব হয়ে উঠেছে। শিক্ষকের এহেন আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন সুশীল সমাজের লোকজন।
প্রশ্ন উঠেছে, ছাত্রের সঙ্গে অনৈতিক আচরণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ইন্ধন নিয়েও। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠান প্রধান আব্দুল মালেকের ভূমিকা নিয়েও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এলাকাবাসী। ঘটনার পর প্রধান শিক্ষক কোনো প্রকার উদ্যোগ না নিয়ে গোপনে ছুটিতে পাঠিয়ে দেন ওই শিক্ষককে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়ার দায় এড়াতে বলছেন ভিন্ন কথা। কেউ অভিযোগ করেনি এমন অজুহাত দেখিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এদিকে ওই শিক্ষক জনসম্মুখে ঘটনা ছড়াছড়ি হওয়ার পূর্বে ঘা ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থী অভিভাবকরা।
জীববিজ্ঞান শিক্ষক সাখাওয়াত উল্লাহ মারুফের মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, এসব অহেতুক। এরকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আমি ছুটিতে আছি।
প্রতিষ্ঠান প্রধান আব্দুল মালেক বলছেন, আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি, তবে শিক্ষার্থী অভিভাবক আমাকে মোবাইল ফোনে অবগত করেছেন। জীববিজ্ঞানের শিক্ষক সাখাওয়াত উল্লাহ মারুফ বর্তমানে ছুটি নিয়ে ময়মনসিংহের বাড়িতে গেছেন।
সূত্র মতে জানা যায়, জীববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক
সাখাওয়াত উল্লাহ মারুফ উপজেলা সদরে এক বাসায় প্রতিদিন সকালে ও বিকালে ছাত্রীদেরকে প্রাইভেট পড়াতেন। ওইদিন বিকেলে অন্য ছাত্রীদের চলে যেতে বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে থাকতে বলেন। সবাই চলে যাওয়ার পর শিক্ষক জোরপূর্বক ওই শিক্ষার্থীর বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। পরে কৌশলে ওই শিক্ষার্থী কক্ষ থেকে বের হয়ে বিষয়টি তার সহপাঠী ও পরিবারের লোকজনকে জানায়। পরে তারা বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানালেও তিনি এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেননি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগতও করেননি।
পরে পুরো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘটনার জানাজানি হলে তাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। সোমবার ক্লাস বর্জন করে বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দোয়ারাবাজার সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. আরিফ মুর্শেদ মিশু বলেন, এ ঘটনায় লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে হলে তদন্ত পূর্বক শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।